রাষ্টসংঘের সাধারণ পরিষদে ভারত তার অর্থনৈতিক এবং বিদেশী নীতির জন্য বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে প্রশংসিত হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করেছেন। এসসিও সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তিনি সরাসরি পুতিনকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান সম্পর্কে বলেন, এটা যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত সময় ছিল না। এই মন্তব্যের পর থেকে নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমি দেশগুলোর কাছ থেকে প্রশংসা জিতে নিতে শুরু করেছেন।
নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্য উল্লেখ করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁই প্রথম প্রশংসা করেছিলেন। সেই সময় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বিপক্ষে অবস্থান করছিলেন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের পর জ্যামাইকা এবং পর্তুগালের মতো দেশগুলিও ভারতের প্রশংসা করে। রাষ্ট্রসংঘের প্রধান গুতেরেস, 'ভারত-ইউএন পার্টনারশিপ ইন অ্যাকশন' প্রদর্শনের জন্য একটি বিশেষ 'ইন্ডিয়া@75' কর্মসূচিতে নয়াদিল্লি নিজেদের অবস্থান উল্লেখ করেছে। জানিয়েছে, ইতিহাসের বৃহত্তম যুব প্রজন্মের আঁতুর ঘর তৈরি হয়েছে ভারত। যার জেরে ভারত ক্রমাগত সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাবে। গুতেরাস জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, তিনি যেভাবে দেশের অভ্যন্তরে সংস্কার করবেন, ভারত সেইভাবে এগিয়ে যাবে।
অন্যদিকে, রুশ বিদেশমন্ত্রী সেরগেই লাভরভ ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় ৩০ মিনিট বৈঠকের পর সেরগেই নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী আসনের জন্য ভারতের পক্ষে সওয়াল করেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা অধিবেশনে বক্তব্য রাখার সময়, লাভরভ বলেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের জন্য ভারত যোগ্য প্রার্থী।
ভারতের প্রশংসা করেন জ্যামাইকার বিদেশমন্ত্রী কামিনা জে স্মিথ। করোনা মহামারীর সময় ভারত যেভাবে জ্যামাইকাকে সাহায্য করেছিলেন, তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন। স্মিথ বলেন, করোনা ভ্যাকসিন দিয়ে যেভাবে ভারত সাহায্য করেছিল, তারজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও দেশের জনগণের কাছে তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, ভারত একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্ত্য রাখতে গিয়ে স্মিথ বলেন, শুরু থেকেই, ভারত একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার ছিল। ভারতেক সহায়তা মহামারী রোধ করতে জ্যামাইকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। জ্যামাইকা ভারত থেকে তার প্রথম জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিনগুলি গ্রহণ করেছিল। জ্যামাইকার মানুষ ভারতের কাছে কৃতজ্ঞ।
গায়ানার বিদেশমন্ত্রী হিউ হিলটন টডও ইউএনজিএ-তে ভারতের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, গায়ানার মতো ছোট দেশগুলি ভারতের কাছ থেকে নানাভাবে উপকৃত হয়। কারণ ভারতের অর্থনীতি এমন একটি অর্থনীতি যা মানুষের উন্নয়নের ওপর জোর দেয়, মানুষকে অন্য যেকোন উন্নয়নের চেয়ে এগিয়ে রাখে।
এদিন পর্তুগালের বিদেশমন্ত্রী ভারতের প্রশংসা করেন। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা UNSC সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেছেন, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারত, ব্রাজিল এবং আফ্রিকা মহাদেশের প্রতিনিধিত্ব অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।