লিওনেল স্কোলানি দায়িত্বে আসার পর থেকে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসা শুরু হয়েছিল আর্জেন্টিনা দলের মধ্যে। খেলার মান থেকে ফুটবলারদের শরীরী ভাষা সবেতেই ছিল উন্নতির ছাপ। বিশেষ করে লিওনেল মেসির সঙ্গে স্কোলানির বোঝাপড়া আর্জেন্টিনাকে পুরনো ছন্দে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
দীর্ঘ দিনের খরা কাটিয়ে কোপা আমেরিকা জয় এবং ফাইনালিসিমায় ইউরো জয়ী ইতালিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া আর্জেন্টিনা দলটা আপাদমস্তক বদলে গিয়েছে।
একটা সময়ে প্রবল ভাবে শোনা যেত, লিওনেল মেসি বার্সেলোনার জার্সিতে যতটা সফল ততটাই নিস্প্রভ আর্জেন্টিনার জার্সিতে। কিন্তু গত কয়েকবছরে পুরোপুরি বদলে গেছে এই চিত্র। এখন যেন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপালেই মেসি আরও বেশি সচল হয়ে ওঠেন। লাগাতার ৩৪ ম্যাচে অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনা দল কাতারে হতে চলা আসন্ন ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২-এ ফেভারিট হিসেবে শুরু করবে। বিশ্বকাপের ড্র-এ আর্জেন্টিনা পড়েছে 'সি' গ্রুপে। আর্জেন্টিনার সঙ্গে ওই একই গ্রুপে রয়েছে সৌদি আরব, পোল্যান্ড এবং মেক্সিকো।
বর্তমানে ফিফা ফ্রেন্ডলি খেলতে দলের সঙ্গে থাকা মেসি জানিয়ে দিয়েছেন কোনও প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবতে তিনি রাজি নন। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক স্রেফ বোঝেন নিজেদের সেরাটা দিতে হবে, বাকি কিছু নিয়েই ভাবার প্রয়োজন নেই। তার মতে প্রতি ম্যাচের আগে নিজেদের যথাযথ প্রস্তুত করাই মূল লক্ষ্য। এরপর মাঠে নিজেদের কাজ ঠিকঠাক করার দিকেই জোর দিয়েছেন মেসি।
বুলগেরিয়া ফুটবলের কিংবদন্তি এবং বার্সেলোনার প্রাক্তনী রিস্টো স্টইচকভকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে মেসি বলেছেন, "এই আর্জেন্টিনা যে কাউকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। প্রতি ম্যাচে কী করতে হবে সেটি আমাদের কাছে পরিষ্কার। প্রতিপক্ষ যারাই হোক না কেন, আমাদের শরীরী ভাষা প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই এক থাকবে এবং একই রকম ভাবে লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।'
তাঁর আরও সংযোজন, "দীর্ঘ সময় একই ফর্মেশনে খেলছি আমরা। বিশ্বকাপে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবো। বিশ্বকাপ জয় যে কোনও দলের কাছেই কঠিন, এবং আমাদের ক্ষেত্রের তার অন্যথা হবে না এটা আমাদের জানা। একটা ছোট ভুল আপনার কাছ থেকে শিরোপা ছিনিয়ে নিতে পারে। তবে আমরা যে কোনও দলের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।"
আসন্ন বিশ্বকাপে নিজেদের গ্রুপ নিয়ে মেসি বলেছেন, "কঠিন গ্রুপ পড়েছি আমরা এবং সেটা নিজেরাও জানি। প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।" মেসি জানিয়েছেন তাঁরা এক একটা ম্যাচ ধরে ধরে এগনোর পক্ষপাতী তাই আগে থেকে কোনও দলকে নিয়ে বেশি চিন্তা-ভাবনা নেই। গোটা দলের ফোকাস প্রথম ম্যাচে জয় তুলে বিশ্বকাপের সামনের পথকে মসৃণ করা।