নয়া টেলিকম বিলের খসড়ায় সোশ্যাল মিডিয়া এবং মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যাল এবং টেলিগ্রামকে নিয়ে আসা হবে বলে জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি বলেছেন, এই জাতীয় অ্যাপগুলো ভারতীয় টেলিগ্রাফ আইনের আওতায় রয়েছে। সেগুলোকে প্রস্তাবিত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। এরফলে ভয়েস কলের সঙ্গে ডেটা কলের পার্থক্য অদৃশ্য হচ্ছে। সেই কারণেই এই পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রক বলেছেন, ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই নয়া বিলের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণের কোনও বোঝা সরকারের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না। মন্ত্রী জানিয়েছেন, টেলিকম বিলের খসড়ায় ইন্টারনেট-ভিত্তিক যোগাযোগ ও সম্প্রচার পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত করতে এবং টেলিযোগাযোগ পরিষেবার সংজ্ঞাকে আরও বিস্তৃত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিলে এই পরিষেবাগুলো ওটিটি পরিষেবা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, টেলিকম পরিষেবা বিস্তৃত করার অর্থ হল মেসেজিং ও যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মগুলোকে এবার থেকে অনুমতি নিতে হবে। টেলিকম সংস্থাগুলোর মতো তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তাদের ওপরো রাজস্ব আদায় করা হবে। টেলিকম পরিষেবার অভ্যন্তরে সমস্ত সরবরাহকারী সংস্থাকে একই আচরণ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই নয়া খসড়া চূড়ান্ত করার আগে স্টক হোল্ডারদের কথা বিবেচনা করা হবে। এই বিলটি আগামী ৬ থেকে ১০ মাসের মধ্যে আইনে পরিণত হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, আমরা এই বিষয়ে কোনও তাড়াহুড়ো করতে চাইছি না। তিনি বলেন, এই বিলটির মাধ্যমে ব্যাপক আইনি পরিবর্তন করা হবে। পরিবর্তণের প্রথমদিকে, ডিজিট্যাল ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা বিল ও পরের দিকে ডিজিট্যাল ইন্ডিয়া বিল নিয়ে আসা হবে।
নয়া বিলে সাইবার জালিয়াতি রোধ করতে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ম্যাসেজিং অ্যাপগুলোতে ফোন করার জন্য কেওয়াইসি নিয় যোগ করা প্রয়োজন বলে তিনি জানিয়েছেন। ইন্টারনেট ভিত্তিক কলগুলির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মূলত সাইবার অপরাধ এড়াতে এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রডব্যান্ড ইন্ডিয়া ফোরামের সভাপতি টিভি রামচন্দ্রন এর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওটিটি পরিষেবাগুলোকে টেলিকমিউনিকেশন পরিষেবাগুলির অন্তর্ভুক্ত করা এবং তাদের লাইসেন্সের অধীন করার মাধ্যমে ডিজিট্যাল ইকোসিস্টেমকে দমিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। যার ফলে সংস্থাগুলো লভ্যাংশ অনেক ক্ষেত্রে হ্রাস পেতে পারে।