|
রেগে লাভ নেই
মহেন্দ্র সিং ধোনি একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, আমরা যখন মাঠে থাকি কেউই কোনও ভুল করতে চাই না। সে ফিল্ডিং মিস করা, ক্যাচ ফেলাই হোক বা অন্য যে কোনও ধরনের ভুল। আমি সব সময়ই এটা উপলব্ধি করার চেষ্টা করি, কী কারণে কোনও ক্রিকেটার ফিল্ডিং মিস করলেন বা ক্যাচ ফেললেন? রেগে গিয়ে কোনও লাভ হয় না। গ্যালারিতে বসে হাজার চল্লিশেক দর্শক খেলা দেখছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে কয়েক কোটি মানুষ খেলা দেখে থাকেন। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটি হলো, খারাপ ফিল্ডিংয়ের কারণ। যদি কেউ খেলার প্রতি ১০০ শতাংশ মনোযোগী হন, তারপরও যদি কেউ মিস করেন তাহলে সেটা আমার কাছে সমস্যা নয়। কেন না, আমি নজর রাখি ওই ক্রিকেটারই ফিল্ডিং অনুশীলনের সময় কটি ক্যাচ ধরছেন। কোথাও কোনও সমস্যা থাকলে সেই খামতি মেটাতে তিনি সচেষ্ট কিনা সেটাও বিবেচনা করা হয়। ফলে শুধু ক্যাচ ফেলা নিয়ে না ভেবে, সামগ্রিকভাবে বিষয়টি আমি দেখে থাকি। কোনও ক্যাচ পড়ার জন্য আমরা হেরেও যেতে পারি। তবে সেখানে নিজের সেরাটা দেওয়ার ক্ষেত্রে খামতি থাকছে না সেটাই আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
|
ক্যাচ ফেলা
এশিয়া কাপে অর্শদীপ সিং ক্যাচ ফেলায় পাকিস্তানের কাছে হেরে গিয়েছিল ভারত। সেজন্য অর্শদীপকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণের মুখে পড়তে হয়। কারও খারাপ ফিল্ডিংয়ে কোনও দল ম্যাচ হারলে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের প্রবল সমালোচনা করা হয়। তবে এটা যে ঠিক নয় তা স্পষ্ট হয়েছে ধোনির কথায়। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, আমরা সকলেই মানুষ। সবার মতো আমারও একই অনুভূতি হয়। সাধারণ মানুষ যখন নিজেদের মধ্যে খেলেন তখন খারাপ কিছু হলে খারাপই লাগে। আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করি। ফলে আমাদেরও খারাপই লাগে। কিন্তু আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে থাকি আমরা। মাঠের বাইরে বসে বলা সহজ, এটা এমনভাবে খেলা উচিত ছিল। কিন্তু মনে রাখতে হবে, মাঠে নেমে তা করে দেখানো সহজ নয়। আমরাও যেমন দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, প্রতিপক্ষ দলও সেটাই করছে। সেই দলের ক্রিকেটাররাও ভালো খেলার লক্ষ্য নিয়েই নামেন। ফলে ওঠা-পড়াও থাকবেই।
উইকেটকিপিংয়ে ফ্যাক্টর
এশিয়া কাপেও ঋষভ পন্থের থ্রো দেখে অনেকে ধোনির অভাব অনুভব করেছেন। উইকেটকিপিং প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মাহি বলেন, আমিও অনেকের মতোই টেনিস বলে খেলা শুরু করি। সফট হ্যান্ডে বল না ধরলে তা তালুবন্দি করতে সমস্যা হতে পারে। চামড়ার বলে উইকেটকিপিং করতে গিয়ে আমি কিরণ মোরের সহযোগিতা পেয়েছি। তিনি নির্বাচক হিসেবে দলের সঙ্গে থাকতেন। আমার কিপিং, ড্রিলসের ক্ষেত্রে অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমার উইকেটকিপিংয়ের টেকনিক যে কপিবুক স্টাইলের নয় সেটা তিনি উপলব্ধি করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। বল ধরার থেকে ছিনিয়ে নেওয়াকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন ধোনি। তিনি বলেন, উইকেটকিপারদের হাতে গ্লাভস থাকে। তার উপরে থাকে রবার, ভিতরে সুতি। তাই এটা এমনিতেই নরম। ফলে বল রিসিভের চেয়ে স্ন্যাচ করাই জরুরি।
মোরের প্রতি কৃতজ্ঞতা
ধোনি বলেন, কিরণ মোরে আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কপিবুক ভুলে ড্রিলে জোর দিতে। এটাই গুরুত্বপূর্ণ। বল ধরাটাই দরকার। যাতে মিস না হয়। অন্য উইকেটকিপারের চেয়ে আমার টেকনিক সামান্য আলাদা ছিল। সেটা বুঝেই মোরে সাহায্য করেছেন। আর সেটাই তাঁকে মাঠে নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বনের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল বলে জানান ধোনি। মহেন্দ্র সিং ধোনি অধিনায়ক হিসেবে নিজেও টিম মিটিংয়ে লম্বা চওড়া ভাষণ দেন না। ছোট ছোট টিম মিটিং করে থাকেন। মজা করে ধোনি বলেন, মাইনাস এক মিটিংয়ের টিম মিটিংও হয়েছে চেন্নাই সুপার কিংসে। অর্থাৎ সাড়ে ৫টায় টিম মিটিং হওয়ার কথা। ৫টা ২৮-এ সবাই হাজির। এক মিনিটের মধ্যেই মিটিং শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে টিম মিটিং হলো মাইনাস এক মিটিংয়ের!
যদি ইনজির সঙ্গে খেলতেন
মহেন্দ্র সিং ধোনির রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেটসের ক্ষিপ্রতা ঈর্ষণীয়। আবার পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক এ ব্যাপারে কুখ্যাতি রয়েছে। ইনজামামের সঙ্গে ব্যাট করলে রান নেওয়ার সময় কী করতেন তাও মজা করে বলেছেন ধোনি। তাঁর কথায়, ইনজামামের সঙ্গে রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেটসের জন্য আমাকে গতি কমাতে হতো। না হলে রান আউট হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।