বোর্ডের এজিএম অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে
সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়ের ফলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও জয় শাহ যথাক্রমে বিসিসিআইয়ের সভাপতি ও সচিব পদে ২০২৫ সাল অবধি থাকতেই পারেন। কিন্তু তারপর দুজনকেই কুলিং অফে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে বোর্ড প্রশাসনে এলেও সভাপতি নয়, সচিব থেকেই ইনিংস ছাড়তে হবে জয় শাহকে। বোর্ডের অন্দরে খবর, অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ বিসিসিআই সভাপতি হতে চান। বেশ কয়েকটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সমর্থনও তাঁর দিকে রয়েছে। উল্লেখ্য, সৌরভ ২০১৯ সালে বিসিসিআই সভাপতি হওয়ার আগে ২০১৪ সালে সিএবি সচিব এবং ২০১৫ সালে সিএবি সভাপতি হয়েছিলেন। জয় শাহ ২০০৯ সালে আমেদাবাদে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ক্রিকেটের এগজিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সালে গুজরাত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব হন। ২০১৫ সালে বিসিসিআইয়ের ফিনান্স ও মার্কেটিং কমিটির সদস্য হন। ২০১৯ সালে জিসিএ-র যুগ্ম সচিবের পদ ছেড়ে দেওয়ার পরের মাসেই বোর্ড সচিব নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিসিসিআই সিদ্ধান্ত নেয়, জয় শাহ আইসিসির সিইসি সভায় প্রতিনিধিত্ব করবেন। ২০২১ সালে তিনি প্রথমবার এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হন।
নির্বাচনী অফিসার নিযুক্ত
নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই বিসিসিআই এ কে জ্যোতিকে নির্বাচনী অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করেছে। তিনি আগেও এই দায়িত্ব সামলেছেন। তিনিই নির্বাচনের নোটিফিকেশন জারি করবেন। বোর্ডের এজিএমের বিজ্ঞপ্তি জারি করবেন সচিব জয় শাহই। যা কয়েকদিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। সাধারণত বিসিসিআই ও বিভিন্ন রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার নির্বাচন সেপ্টেম্বরের শেষে হয়ে থাকে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ যে সময়ে আসে তাতে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন সেরে ফেলার সময় নেই। বেশিরভাগ রাজ্য ক্রিকেট সংস্থারই পরিকল্পনা ১৬ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও বার্ষিক সাধারণ সভা সেরে ফেলা। অবশ্য বোর্ডের এজিএমের পরেও কোনও কোনও রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার বার্ষিক সভা ও নির্বাচন হতে পারে। মুম্বইয়েই এবার বিসিসিআই এজিএম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
জয় হচ্ছেন সভাপতি?
বিসিসিআইয়ের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নন, জয় শাহই পরবর্তী বোর্ড সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে। সেক্ষেত্রে সচিব পদে আসবেন কোষাধ্যক্ষ অরুণ সিং ধুমল, তিনি আবার কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের ভাই। ধুমল ২০১২ ও ২০১৫ সালে হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি ছিলেন, তখন অনুরাগ ছিলেন সভাপতি। লোধা কমিশনের সুপারিশের পর এইচপিসিএ চালানোর জন্য যে অ্যাড হক কমিটি গড়া হয়েছিল সেই তিন সদস্যের কমিটির মাথায় ছিলেন ধুমল। এরপর বিসিসিআইয়ের কোষাধ্যক্ষ হন। এবার সচিব হওয়ার দৌড়ে তিনি এগিয়ে। বোর্ড প্রশাসনে প্রত্যাবর্তন হতে পারে অনিরুদ্ধ চৌধুরীর, তিনি কোষাধ্যক্ষ হতে পারেন। অরুণ জেটলির পুত্র রোহন জেটলিও এবারর বিসিসিআইয়ের কোনও পদাধিকারী হতে পারেন। আইপিএল চেয়ারম্যান হতে পারেন রাজীব শুক্লা।
আইসিসিতে সৌরভ ও শ্রীনি-ফ্যাক্টর
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ফেভারিট। যদিও আইসিসিতে বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য নাম ভাসছে রাজীব শুক্লা ও ব্রিজেশ প্যাটেলের। ব্রিজেশ বর্তমানে আইপিএল চেয়ারম্যান। তবে সৌরভের গ্রহণযোগ্যতার ধারেকাছে কেউ নেই। বোর্ডে এখনও এন শ্রীনিবাসনের ভালোই প্রভাব রয়েছে। অনেকের ধারণা, শেষ মুহূর্তে অমিত শাহ ব্যাট না ধরলে শ্রীনির পছন্দের ব্রিজেশই বোর্ড সভাপতি হয়ে যেতেন। স্লগ ওভারে যাবতীয় হিসেবনিকেশ উল্টে দিয়ে সৌরভ বোর্ড সভাপতি ও জয় সচিব হন। অনেকেরই ধারণা, এতে তাঁদের মাথায় ছিল অমিত শাহেরই হাত। আইসিসিতে ভারতের প্রভাব বৃদ্ধিতে ভূমিকা ছিল শ্রীনিবাসনের। ফলে তিনি বোর্ড রাজনীতিতে কতটা সক্রিয় হন সেটাও দেখার। তাঁর বয়স ৭৭, শরীর খুব ভালো নয়। এই অবস্থায় শ্রীনির ভূমিকার দিকেও থাকছে নজর।