সৌরভের জায়গায় জয়?
সৌরভ যখন বিসিসিআই সভাপতি হন সেবার এন শ্রীনিবাসন ঘনিষ্ঠ ব্রিজেশ প্যাটেলই বোর্ড সভাপতি হওয়ার বিষয়ে এগিয়ে ছিলেন। এরই মধ্যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন অমিত শাহ। তারপরই শেষ মুহূর্তে বদলে যায় যাবতীয় সমীকরণ। ব্রিজেশকে লাস্ট ল্যাপে পিছনে ফেলে বিসিসিআই সভাপতি হন সৌরভ, সচিব জয়। আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ব্রিজেশকে। ভারতীয় ক্রিকেট মহলের ধারণা, এই সমীকরণ বদলে দেওয়ার পিছনে ছিলেন অমিত শাহ। এখন প্রশ্ন হলো, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সৌরভ ও জয় আরও তিন বছর বিসিসিআইয়ে থাকতে পারবেন। তবে দুজনকেই একসঙ্গে কুলিং অফে যেতে হবে। তাহলে তো বোর্ড সভাপতি হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে জয়ের।
আইসিসিতে দাদাগিরি
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পরবর্তী আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ফেভারিট। সেক্ষেত্রে বিসিসিআই সভাপতি হতে জয়ের পথ সুগম হতেই পারে। তবে আইসিসির বোর্ড মিটিং নভেম্বরে। তখনই পরবর্তী আইসিসি চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা হবে। তার আগে বিসিসিআইয়ে নির্বাচন। সেক্ষেত্রে সৌরভের মতো প্রাক্তন অধিনায়ক তথা দক্ষ প্রশাসককে সরিয়ে জয় শাহ যদি সভাপতি হন তাহলে বিজেপির উপর রোষ আছড়ে পড়তে পারে ক্রিকেটপ্রেমীদের। ফলে বিজেপি নেতৃত্ব এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জয়কে বোর্ড সভাপতির মসনদে বসাতে কতটা সক্রিয় হবে বা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত।
সৌরভ ভাবলেশহীন
সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায় গতকাল ইডেন গার্ডেন্সে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। সৌরভ সুপ্রিম কোর্টের রায় সম্পর্কে কিছুই বলতে চাননি। শুধু বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট যেটা ভালো বুঝেছে সেই মোতাবেক রায় দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কী বলব? কাজ করে যেতে হবে। তাপ-উত্তাপ ছিল যখন দেশকে নেতৃত্ব দিতাম। তার সঙ্গে কোনও কিছুরই তুলনা চলে না। সৌরভ মেনে নেন তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা বাড়ার কথা। তিনি বলেন, দায়বদ্ধতাও বাড়ল। আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, সবে তো রায় হলো। এখনও কিছু ভেবে দেখিনি। সময় তো রয়েছে।
শ্রীনিকে নিয়ে সমীকরণ
বিসিসিআই থেকে আইসিসিতে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে ৭০ বছরের ঊর্ধ্বসীমাও উঠে গিয়েছে। ফলে দরজা খুলে গিয়েছে এন শ্রীনিবাসনের জন্যও। আইসিসিতে বিসিসিআইকে শক্তিধর করার ক্ষেত্রে ভূমিকা ছিল শ্রীনির। আইসিসির লভ্যাংশের যে বেশিরভাগটা বিগ থ্রি অর্থাৎ ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডের কাছে যায় সেই পরিকল্পনাটাও ছিল শ্রীনির। লোধা কমিশনের সুপারিশ শ্রীনির ক্রিকেট প্রশাসনে ফেরার সম্ভাবনা অনিশ্চিত করে দিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর শ্রীনি-শিবিরও নড়েচড়ে বসেছে বলে জানা যাচ্ছেন। নভেম্বরে ব্রিজেশ প্যাটেলের ৭০ বছর পূর্ণ হবে। তাঁর জায়গায় নতুন কেউ আইপিএল চেয়ারম্যান হতে পারেন। ব্রিজেশকেও আইসিসিতে পাঠানোর সম্ভাবনা অনেকেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না। শ্রীনি কোন গুগলি দেন সেটাও দেখার। তবে এখনও আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে সৌরভই।
সিএবি কোন পথে?
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর একটা বিষয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে অভিষেক ডালমিয়াকে সিএবি সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে হবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিএবির এজিএম সম্ভব নয়। ফলে দুর্গাপুজোর পর সিএবির এজিএম হতে পারে। স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের সিএবি সভাপতি হওয়া কার্যত নিশ্চিত। সিএবিতে নির্বাচন হলে রাজ্যের শাসকদলের পছন্দ মান্যতা পায়। ফলে স্নেহাশিসের জায়গায় ইস্টবেঙ্গল ক্লাব থেকে প্রতিনিধিত্ব করা বিশ্ব মজুমদার সচিব হয়ে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে অভিষেক বিসিসিআইয়ের কোন পদে বসেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা। সৌরভ সিএবি থেকে বিসিসিআইয়ে গিয়েছেন। সেক্ষেত্রে অভিষেক কীভাবে বিসিসিআই প্রশাসনে যান সেটাও দেখার।