করোনা মৃত্যুর জন্য দায়ী বিশ্বব্যাপী ব্যর্থতা
ল্যানসেটের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিবেদনে একটি রূপরেখা প্রকাশ করা হয়েছে। এই রূপরেখা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যের ওপর মানুষের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। জানা গিয়েছে, এই প্রতিবেদনে প্রতিরোধ, স্বচ্ছতা, অপারেশনাল সহযোগিতা, যৌক্তিকতা, আন্তর্জাতিক সংহতি এবং মৌলিক স্বাস্থ্য অনুশীলনের ব্যাপক ব্যর্থতার কথা স্বীকার করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এই ব্যর্থতার ফলে ১৭.২ মিলিয়ন মানুষের করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে। যা নথিভুক্ত করা হয়নি।
করোনায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি
জানা গিয়েছে, ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) তৈরি করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর অনুমানের উপর ভিত্তি করে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। আইএইচএমই এর তরফে অনুমান করা হচ্ছে, ৩ মে ২০২২ পর্যন্ত করোনার জেরে ১৭.২ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে ভারত ল্যানসেটের একাধিক রিপোর্ট করেছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, নথিভুক্তের থেকে করোনায় মৃতের সংখ্যাটা অনেক বেশি।
ল্যানসেটের দাবি অস্বীকার ভারতের
চলতি বছর নিউ ইয়র্ক টাইমসের তরফে একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, হু বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান গত বছরের শেষের দিকে ভারত করোনায় মৃতের যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল, তার থেকে ৩ মিলিয়ন বেশি মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ল্যানসেটের তরফে দাবি করা হয়েছিল, করোনায় ভারতে ৪ মিলিয়ন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রতিবেদনের পরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি ল্যনসেট যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখানে দাবি করেছে, ভারত করোনায় মৃতের সঠিক তথ্য প্রকাশ করেনি। ভারতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা রিপোর্টের সঙ্গে অনেক বেশি। ল্যানসেটের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত ডেল্টা ওয়েভ চলাকালীন সরকার যে মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তা অনেকটা কম।
করোনা বিধি না মানার কারণেই মহামারী
ল্যানসেটের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২০ সালে করোনা মহামারী রোধ করার জন্য বিশ্বের যে কয়েকটি দেশটি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধ সহ কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছিল, তারমধ্যে ভারত অন্যতম। কঠোর লকডাউন ও করোনা বিধির জেরে ২০২০ সালে করোনা মহামারী ভারতে প্রভাব বিস্তার করলেও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারেনি। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২০ সালে করোনা মহামারীর জেরে ৬৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ডেল্টা ওয়েভে করোনা মহামারী
২০২১ সালের শুরুর দিকে করোনা মহামারীতে আক্রান্তের সংখ্যা কমে যায়। যার ফলে করোনা বিধি সহজ করে দেওয়া হয়। এরপরেই দ্রুত করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। ভারতে ডেল্টার ওয়েভ শুরু হয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নির্বাচন, ধর্মীয় উৎসব এবং জনবিক্ষোভ সহ একাধিক কারণে দ্রুত করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এই ধরনের উৎসবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাস্ক পরেননি সাধারণ মানুষ বলে অভিযোগ। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত করোনায় ২০ মিলিয়ন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আড়াই লক্ষ করোনা ভাইরাসের জন্য মৃত্যু হয়েছিল বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্টে দাবি করা হয়। যদিও ল্যানসেট বা হু তাদের একধিক রিপোর্টে দাবি করেছ, এই মৃত্যুর সংখ্যাটা অনেক বেশি। ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মৃত্যুর পরিসংখ্যান গোপনের অভিযোগ করা হয়।