কী মনে করছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা?
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা মনে করছে যে আফগানিস্তানেই মাসুদ আজহার লুকিয়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্র বলছে যে, "আমরা আফগান বিদেশ মন্ত্রালয়কে এক পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখেছি, যাতে মাসুদ আজহারকে খুঁজে বের করতে, রিপোর্ট করতে এবং গ্রেপ্তার করতে বলেছি কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে সে আফগানিস্তানেই কোথাও লুকিয়ে রয়েছে।"
তালিবান নেতা কী বলছে?
তালিবান নেতা সুহেল শাহীন বলেছেন যে তারা আজহারের গ্রেপ্তারের বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে কোনও চিঠি পাননি। সুহেল শাহীন রাষ্ট্রসংঘে আফগানিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং দোহার তালেবানের রাজনৈতিক কমিটিরও প্রধান। প্যারিস-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক ওয়াচডগ ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) রাষ্ট্রসংঘের মনোনীত কিছু সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসলামাবাদকে চাপ দেওয়ার পরে এই খবর মিলেছে, যা অবশেষে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকা থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে। পাকিস্তান জুন ২০১৮ থেকে 'FATF' ধূসর তালিকায় রয়েছে আর্থিক তছরুপ রোধে ব্যর্থতার জন্য, যা সন্ত্রাসবাদে ইনভেস্টমেন্ট করা হয় বলে খবর রয়েছে।
সাজিদ মিরের উপর পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ
উল্লেখযোগ্যভাবে, লস্কর ই তৈয়বা (এলইটি) অপারেশনাল কমান্ডার সাজিদ মিরের উপর পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ, যাকে তাঁরা সদ্য পর্যন্ত মৃত ঘোষণা করে চলেছে, সেটি পাকিস্তানের উপর 'FATF'-এর ক্রমাগত চাপেরই ফলাফল বলে মনে করা হচ্ছে।
পাক দাবি সন্দেহজনক
যদিও ইসলামাবাদ বলছে যে আজহার পাকিস্তানে নেই এবং সম্ভবত আফগানিস্তানে থাকতে পারে কিন্তু ঘটনা হল পাকিস্তানের এই দাবি সত্ত্বেও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না আফগানিস্তানে। উলটে আজহার পাকিস্তানি সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কগুলিতে জেএম ক্যাডারদের জিহাদে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে চলেছে এবং কাবুলের তালেবান দখলের প্রশংসা করছে। আবার সে এও দাবি করেছে যে তালিবানের বিজয় অন্যত্র মুসলিম বিজয়ের পথ খুলে দেবে। আর সেটাই পাকিস্তানের দাবিকে সন্দেহজনক করে তুলেছে।
প্রসঙ্গত ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে কাঠমান্ডু থেকে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট হাইজ্যাক করে আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাওয়ার পর যাত্রীদের বিনিময়ে ভারত তাকে অন্য দুই সন্ত্রাসবাদীর সাথে মুক্ত করার পরে আজহার জইশ-ই-মোহাম্মদ সন্ত্রাসী সংগঠন গঠন করে। তারপর থেকে চলছে তাকে ধরার জন্য খোঁজ।