বিজেপির নবান্ন অভিযানের আগেই বামেদের সফল কর্মসূচি
সম্প্রতি তৃণমূল নেতা-নেত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলের মতো দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতারা। তৃণমূলের এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠে চোর ধরো জেল ভরো অভিযানে নামছে সমস্ত বিরোধী দলই। বিজেপি দিয়েছে নবান্ন অভিযানের ডাক। আর সিপিএম তথা বামেরা ডাক দিয়েছে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানের।
বামেরাও শামিল হন বিজেপির নবান্ন অভিযানে, ডাক শুভেন্দুর
এই পরিস্থিতি বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী হুগলির পাণ্ডুয়া থেকে নবান্ন অভিযানের প্রস্তুতি সভায় আওয়াজ তোলেন, বামেরা যদি সত্যি সত্যি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উৎখাত চান, তবে তাদেরও বিজেপির নবান্ন অভিযানে শামিল হওয়া উচিত। তিনি এই মর্মে আর্জি জানান, বামেরাও শামিল হন বিজেপির নবান্ন অভিযানে।
তৃণমূলের বিরোধিতায় কি যথার্থ সমর্থন নেই একা বিজেপির
শুভেন্দু অধিকারীর এই আহ্বানে রাজ্য রাজনীতিতে নয়া জল্পনা শুরু হয়েছে। একুশের নির্বাচনের আগেও এভাবে বামেদের ভোট বিজেপির বাক্সে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এবার বামেদের সরাসরি বিজেপির সঙ্গে যৌথ অভিযানের আহ্বান জানানো হল। তাতেই প্রশ্ন, বিজেপি কি একা তৃণমূলের বিরোধিতায় যথার্থ সমর্থন জোগাড় করতে পারছে না?
শুভেন্দু অধিকারীর বার্তা রাজনৈতিক মহলকে ভাবাচ্ছে
শুভেন্দু অধিকারী এদিকে বলেছেন, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর বিজেপির নবান্ন অভিযান এমনই চেহারা নিতে চলেছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। এবার এক অনন্য রেকর্ড তৈরি হতে চলেছে। এদিকে বামেদেরও 'চোর ধরো জেল ভরো' স্লোগানকে সামনে রেখে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান সফল ছিল। তারপর শুভেন্দু অধিকারীর বার্তা রাজনৈতিক মহলকে নতুন করে ভাবাচ্ছে।
বামেরা বহু ক্ষেত্রেই বিজেপিকে টেক্কা দিয়েছে, ফিরছে প্রাসঙ্গিকতা
একুশের নির্বাচনের পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে একটা কথা প্রচারিত হচ্ছে যে, বামেদের যে সমস্ত ভোট বিজেপির বাক্সে চলে গিয়েছিল, তা ফের ফিরতে শুরু করেছে। সম্প্রতি পুরনির্বাচন ও উপনির্বাচনে বামেরা বহু ক্ষেত্রেই বিজেপিকে টেক্কা দিয়েছে। তাতেই প্রমাণিত বামেরা ফের তাঁদের প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পা্চ্ছে এবং হারানো ভোটব্যাঙ্কও ফিরে আসছে।
বিজেপি ছেড়ে বামেদের দিকে ঢলে পড়েছেন বহু মানুষ? তাই কি...
এখন প্রশ্ন, তবে কি একুশের নির্বাচনের আগে বিজেপি যে পরিমাণ জন সমাগম ঘটাতে পারত, এখন তা পারছে না। বিজেপি ছেড়ে বামেদের দিকে ঢলে পড়েছেন বহু মানুষ? যে কারণে বিজেপির অভিযানে বামেদেরও ডাকছেন শুভেন্দু। যাতে জনসমাগম অন্য চেহারা নিতে পারে মঙ্গলবার। শুভেন্দু ফলাও করে বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করতে বাম-সিপিএমকে যৌথ আন্দোলন করা জরুরি।
বামেরা অক্সিজেন পেতেই ভয় পেয়েছে বিজেপি, আসন কি টলমল
সিপিএম শুভেন্দু অধিকারীর এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, আন্দোলন কীভাবে করতে হবে, আর কোন পথ করতে হবে, তা বিজেপির কাছে আমাদের শিখতে হবে না। আন্দোলনের রাস্তা বামেরাই দেখিয়েছে। বামেরা জানে কীভাবে আন্দোলন করতে হয়, সেজন্য বিজেপির সঙ্গে যৌথ অভিযানের কোনও প্রয়োজন নেই। শুভেন্দুর আহ্বান শুনে বাম নেতারা এমন প্রশ্নও তুলেছেন, তবে কি বামেরা অক্সিজেন পেতেই ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাঁদের আসন টলমল করতে শুরু করেছে। তাই বামেদের সঙ্গে হাত মেলাতে চাইছে তারা।