শামিকে নিয়ে ছেলেখেলা!
মহম্মদ শামিকে নিয়ে এই ছেলেখেলা অনেকেই মানতে নারাজ। মাঝে শোনা গিয়েছিল, শামি নাকি টি ২০ আন্তর্জাতিকে নির্বাচকদের ভাবনায় নেই। তাই যদি হবে তাহলে টি ২০ বিশ্বকাপের মূল দলে না রেখে কেন তার আগে ৬টি ম্যাচের দলে তাঁকে রাখা হলো? টি ২০ বিশ্বকাপের মাসখানেক আগে যখন সেরা কম্বিনেশন খেলানোই প্রত্যাশিত, তাহলে শামিকে দলে রাখা কি শুধুই ড্রেসিংরুম বা ডাগ আউটে বসিয়ে রাখার জন্য? নাকি অস্ট্রেলিয়ায় বোলিং কম্বিনেশন কেমন হবে সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতই হতে পারেনি দ্রাবিড় অ্যান্ড কোম্পানি?
সিদ্ধান্তহীনতা স্পষ্ট
মহম্মদ শামি গত টি ২০ বিশ্বকাপের পর থেকে একটিও টি ২০ আন্তর্জাতিকে খেলেননি। আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের হয়ে তিনি ১৬ ম্যাচে ২০ উইকেট নেন। ইকনমি ৮.১০। সেরা বোলিং ২৫ রানে ৪ উইকেট, গড় ১৮.৮৫। এরপর ইংল্যান্ডে টেস্টে শামি দুটি উইকেট নেন। একদিনের সিরিজে মোট চারটি উইকেট নেন। সেরা বোলিং ছিল ৩১ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট। শামিকে নিয়ে নির্বাচক তথা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তহীনতা স্পষ্ট আজকের দল নির্বাচনে। পাছে প্রায় বছরখানেক টি ২০ আন্তর্জাতিক না খেলা শামিকে সরাসরি বিশ্বকাপের দলে রাখলে কথা ওঠে, সে কারণেই কি মুখরক্ষার জন্য তাঁকে দেশের মাটিতে সিরিজের দলে রাখা? আইপিএলের পারফরম্য়ান্স দেখে শামিকে যদি টি ২০ বিশ্বকাপের জন্য ভাবাই হতো, তাহলে তাঁকে তো টি ২০ ফরম্যাটে খেলানোর অনেক সুযোগ ছিল। দল নির্বাচন দেখে ঠিক সে কথাটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে।
শামি কীভাবে বিশ্বকাপের দলে ঢুকতে পারেন?
টি ২০ আন্তর্জাতিকে শামি ১৭ ম্যাচে ১৮টি উইকেট নিলেও এই ফরম্যাটে তিনি মোট ১৩৩টি ম্যাচ খেলেছেন, উইকেট রয়েছে ১৫৬টি। ইকনমি ৮.২৮। শামি যে কোনও সময় উইকেট তুলে নিতে দক্ষ। এশিয়া কাপে ভারতীয় বোলিংয়ের হতশ্রী দেখে শুধু এই কারণেই অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের কথা ভেবে তাঁকে খেলানোর দাবি জোরালো হয়েছিল। কিন্তু দেশের মাটিতে সিরিজের দলে রেখে শামিকে টি ২০ বিশ্বকাপে রাখা হলো রিজার্ভ হিসেবে। কোনও ক্রিকেটার চোট বা অসুস্থ হয়ে ছিটকে গেলে তাঁর জায়গায় রিজার্ভ ক্রিকেটারদের থেকে নেওয়া হয়। জসপ্রীত বুমরাহ ও হর্ষল প্যাটেল ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাঁরাও অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দলে রয়েছেন। ভারতের মাটিতে দলে তো খুব বেশি জোরে বোলারও লাগবে না। তাহলে এই কি এই দুই পেসার ম্যাচে কেমন খেলেন তা যাচাই করে তাঁদের বিকল্প হিসেবে শামিকে রিজার্ভে রাখা হলো? কেউ ছিটকে গেলে তবে খেলবেন শামি? কিন্তু জসপ্রীত বুমরাহর পর দেশের সেরা পেসার শামিকে টি ২০ বিশ্বকাপে দলে রাখা উচিত ছিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ থেকে ক্রিকেটপ্রেমীরা।
|
সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম
আইপিএলে ২২ উইকেট পাওয়া পেসার উমরান মালিক ও ২১ উইকেট পাওয়া স্পিনার কুলদীপ যাদবেরও ঠাঁই হয়নি টি ২০ দলে। ফলে কুল-চা জুটিকে টি ২০ বিশ্বকাপে দেখা যাবে না। কিন্তু টি ২০ বিশ্বকাপের দলে ব্রাত্য থাকা দুই ক্রিকেটারই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং। একজন হলেন শামি, অপরজন সঞ্জু স্যামসন। চলতি আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক ১৭ ম্যাচে ৪৫৮ রান করেছিলেন, দুটি অর্ধশতরান-সহ। স্ট্রাইক রেট ১৪৬-এর উপর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে একদিনের আন্তর্জাতিকে অর্ধশতরানের পর টি ২০-তেও দ্রুত রান তুলে দলের হয়ে অবদান রেখেছিলেন। কিন্তু ফিনিশার দীনেশ কার্তিককেই দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে ঋষভ পন্থের সঙ্গে সুযোগ দিয়েছেন নির্বাচকরা। সঞ্জু স্যামসন ভালো খেলেও পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন না বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ তুলেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।