বাল্য বিবাহ ও নাবালিকাদের গর্ভধারনের মতো ঘটনা এড়াতে এবার ইউনিসেফের সঙ্গে জোট বাঁধল রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, ইউনিসেফ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার ছোট ছোট স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা দলের সহযোগিতায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করার একটি প্রকল্পের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সারা দেশে বাল্য বিবাহ ও নাবালিকাদের গর্ভধারনের ঘটনায় বাংলা শীর্ষে রয়েছে। যা রাজ্য সরকারের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখান থেকেই রাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ইউনিসেফের সঙ্গে এই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
ইউনিসেফের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণ ও বাল্য বিবাহের মতো ঘটনা এড়াতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ইউনিসেফ একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের ২৩টি জেলার ৮৭টি ব্লকে ১১০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা এসএইচজি তৈরি করা হবে। এই গোষ্ঠী বা সংগঠনগুলো নাবালিকাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবে। পরিবারগুলোকে সচেতন করবে। এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামীণ জীবিকা মিশনের প্রধান কার্য নির্বাহী আধিকারিক বিভু গোয়েল জানিয়েছন, নাবালিকাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা, তাদের সমস্যার কথা শোনা, বাল্য বিবাহ বন্ধে সচেতন করার চেষ্টা স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা সংগঠনগুলো করবে।
ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে অনুসারে বাল্য বিবাহ ও কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে-৫ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ২০১৯-২০ সালে ২০ থেকে ২৪ বছরের মহিলাদের মধ্যে ৪১.৬ শতাংশের কিশোরী অবস্থায় বিয়ে হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৬৪ শতাংশ মহিলা কিশোরী অবস্থায় মা হয়েছেন। কর্মসূচীর প্রথম পর্বে ছোট ছোট যে স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা সংঘ তৈরি করা হবে, তার সদস্যরা নিজের সন্তানদের নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে না দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন।
ইউনিসেফের তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু ও মায়েদের স্বাস্থ্যের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হবে। ইউনিসেফের প্রশিক্ষণ ও টুলস ডেভালপের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত সাহায্য করা হবে। ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধান মহম্মদ মহিউদ্দিন জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের শেষ পর্যন্ত পৌঁছনো অবশ্যই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই বাল্য বিবাহের নেপথ্যে একাধিক সামাজিক প্রতিকূলতা রয়েছে। সেগুলোকে মোকাবিলা করে রাজ্যের সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো সহজ কথা নয়। সামাজিক প্রতিকূলতা রোধ করতে বিভিন্ন সময়ে একাধিক নয়া সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই প্রকল্পটির জন্য ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে ইউনিসেফ পশ্চিমঙ্গের রাজ্য গ্রামীন জীবিকা মিশনের সদস্যদের সাহায্য নেওয়া হবে। গ্রামাঞ্চলে গণসংযোগ বাড়ানো হবে।
Atal Pension Yojana-নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত! শনিবার থেকেই এর সুবিধা কারা পাবেন না জানুন