বিপ্লব দেবকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা
বিপ্লব দেবের মন্ত্রিসভা গোষ্ঠী কোন্দলে পরিপূর্ণ ছিল। মন্ত্রিসভার একটা বড় অংশ ছিলেন বিপ্লব দেবের পরিপন্থী। সুদীপ রায় বর্মন তো আগেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন মন্ত্রিসভা থেকে। কিন্তু থেকে গিয়েছেন সুদীপ রায় বর্মনের অনুগামীরা। এই অবস্থায় বিজেপির মন্ত্রিসভা সবসময় চ্যালেঞ্জিং ছিল। বিপ্লব দেবের উপর চাপ বাড়ছিল। তাই তাঁকে সরিয়ে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে এনে সেই চাপ প্রশমন করেছে বিজেপি।
রাজ্য সভাপতি বা রাজ্যসভায় পাঠানো হতে পারে
বিপ্লব দেবের পরিবর্তে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মানিক সাহা। তিনি ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ এবং দলের রাজ্য সভাপতি। রাজ্যসভার সাংসদ ও রাজ্য সভাপতি পদে ইস্তফা দিয়ে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসানো হয়েছে। এরপর মনে করা হচ্ছিল রাজ্য সভাপতি বা রাজ্যসভায় পাঠানো হতে পারে বিপ্লব দেবকে। কিন্তু রাজ্য সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন রাজীব ভট্টাচার্য।
রাজ্যসভার সাংসদ পদ দেওয়া হতে পারে
সম্প্রতি বিপ্লব দেবকে হরিয়ানার রাজ্যের ইনচার্জ করা হয়েছে। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে তিনি রাজ্য রাজনীতিতে থেকে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। এবার তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ পদ দেওয়া হতে পারে। মানিক সাহার ছেড়ে যাওয়া পদে তাঁকে আনা হতে পারে। তাঁকে সাংসদ করলে তাঁর অনুগামীদের ক্ষোভও নিরসন হবে। বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। সেইমতোই তাঁর নাম মনোনীত হয়।
২০২৩-এর নির্বাচনের আগে বিজেপি
মুখ্যমন্ত্রী পদ হারানোর পর থেকেই দলে তাঁর গুরুত্ব কমে গিয়েছিল। তার একটা খারাপ প্রভাব ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের মুখে পড়তে শুরু করেছিল। তাই তড়িঘড়ি তাঁকে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় করল বিজেপি। আবার তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ পদ দিয়ে গুরুত্ব বাড়ানোর সিদ্ধান্ও প্রায় পাকা। মোট কথা, ২০২৩-এর নির্বাচনের আগে বিজেপি কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না।
বিপ্লব দেবকে সরিয়ে দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ ছিল
বিপ্লব দেবের হাত ধরে ২৫ বছর পর বাম শাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল ত্রিপুরা। ২০১৮-য় রাজ্যে পরিবর্তন এলেও ত্রিপুরার মানুষ বিজেপি সরাকারের বিরুদ্ধে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠছিল। বিজেপির আমলেও উন্নয়নের দিশা পায়নি ত্রিপুরা। উল্টে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সুষ্ঠু রাজনীতির অবকাশ নেই বলে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। এই অবস্থায় বিপ্লব দেবকে সরিয়ে দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল।
বিপ্লবকে গুরুত্বের আসন ফিরিয়ে দিচ্ছে বিজেপি
পরিবর্তনের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পুরো মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না, সেটা একটা খারাপ বার্তা যাচ্ছে। তবুও বৃহত্তর স্বার্থে বিজেপি তা করতে বাধ্য হয়েছে। এবার বিপ্লব দেবকে ধীরে ধীরে গুরুত্বের আসন ফিরিয়ে দিচ্ছে বিজেপি। তাঁকে রাজ্যভার সাংসদ পদে মনোনীত করার পর তিনি টুইটে ধন্যবাদ দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডা-সহ গোটা বিজেপি পরিবারকে।