নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে গ্রেফতারের আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী এই আবেদন করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত, বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট ও বিচারপতি পিএস নরসিমার একটি বেঞ্চ শুক্রবার এই আবেদন খারিজ করে দেয়। জানানো হয়, এর প্রভাব সুদূর প্রসারী। তাই এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করার আগে সতর্কতার প্রয়োজন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত বলেন, 'এই আবেদন অত্যন্ত সহজ শোনাতে পারে। কিন্তু আবেদন বাস্তবায়িত করলে এর প্রভাব পড়বে সুদূর প্রসারী। তাই ধরনের নির্দেশিকা জারি করার আগে সব সময় আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। আমরা এই আবেদন প্রত্যাহার করার পরামর্শ দেব।' জানা গিয়েছে, আইনজীবী চাঁদ কোরেশীর মাধ্যমে আইনজীবী আবু সোহেল এই মামলা দায়ের করেছিল। পাশাপাশি একটি নিরপেক্ষ তদন্তে জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছিলেন আইনজীবী। প্রসঙ্গত, বেসরকারি একটি টেলিভিশনের বিতর্কে প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা নবী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। তারপর থেকেই দেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দেশের একাধিক জায়গায় নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।
প্রসঙ্গত জুলাই মাসে নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর সম্পর্কে প্রতিক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, বিজেপির প্রাক্তন এই নেত্রীর বিরুদ্ধে কোনও দমনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। দেশের বিভিন্ন জায়গায় দায়ের করা এফআইআর বর্তমানে দিল্লি পুলিশের অধীনে। জুলাই মাসে নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পরেই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। একাধিক জায়গায় অশান্তির সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও সেই বিক্ষোভ হিংসার আকার ধারণ করে। প্রাণহানীর মতো ঘটনা ঘটে।
বিজেপি দ্রুত নূপুর শর্মাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। নূপুর শর্মাকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি বিজেপির তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ভারতের ইতিহাসে সব সময় সমস্ত ধর্মের সহাবস্থান দেখতে পাওয়া গিয়েছে। কোন ধর্ম বা ধর্মীয় ব্যক্তির প্রতি অসম্মানজনক আচরণ বিজেপি কখনও সহ্য করেনি। এই ধরনের কার্যকলাপের নিন্দা করছে দল। এই ধরনের মন্তব্যকে বিজেপি কখনও প্রশ্রয় দেয় না।
নূপুর শর্মাকে বহিষ্কার করে বিতর্ক এড়াতে পারেনি বিজেপি। দেশের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে। মধ্য প্রাচ্যের একাধিক দেশ ঘটনার সমালোচনা করেছিলেন। কাতার, সোদি আরব, সংযুক্ত আমিরশাহীর পাশাপাশি ভারতের মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত ইরানও সমালোচনা করে ভারতের। অন্যদিকে, বাইডেন প্রশাসন নূপুর শর্মার মন্তব্যের বিরোধিতার পাশাপাশি বিজেপির এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছিল।