তালাবন্ধ একাধিক আসমির বাড়ি
বিলকিস বানো মামলায় দোষীরা রাধিকাপুর গ্রামে থাকেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মুক্তির পর থেকে তাদের আর গ্রামে দেখতে পাওয়া যায়নি। বিলকিস বানো মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত শৈলশ ভাট ও মিতেশ বাড়ি তালাবন্ধ অবস্থায় দেখা যায়। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মুক্তির পর থেকে দুই দোষীকে তাঁরা দেখতে পাননি। অভিযুক্ত রাধেশ্যাম শাহের বাড়িও তালাবন্ধ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিবেশীরাও একই ধরনের কথা বলেন। যদিও বাঁকাভাইয়ের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দেখা যায়।
মিথ্যা মামলার ভয়ে গ্রাম ছাড়া!
শৈলেশ বাট ও মিতেশ ভাটের বাড়ি থেকে ৫০ মিটার দূরে বাঁকাভাইয়ের বাড়ি। সেখানে তাঁর স্ত্রী মঙ্গলিবেন ও সন্তানদের দেখতে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে ১১ জনই ভয়ে রয়েছেন। এখানে অন্য সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা হুমকি দিয়েছেন, তাঁদের আবার জেলে পুরে দেবেন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে। তাই তাঁরা মুক্তি পাওয়ার পর গ্রামে প্রবেশ করেননি। ১১ জনই পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। নিজের আর্থিক অবস্থার কথা বলতে গিয়ে ভেঙে পড়েন মঙ্গলিবেন। তিনি বলেন, 'দৈনিক ১০০টাকাও আয় করতে পারি না। মাঝে মাঝে সে টাকাও আয় করতে পারি না। আত্মীয়দের কাছে সাহায্য চাইতেও পারি না। তারা আর কতদিন খাওয়াবে। একপ্রকার না খেয়েই থাকতে হচ্ছে।'
কাজ পাচ্ছেন না দোষীদের পরিবার
বাঁকাভাইয়ের স্ত্রী মঙ্গলিবেন জানিয়েছেন, দিন মজুরি করে দিন কাটে। কিন্তু ১৫ অগাস্ট ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই তিনি কাজ পাচ্ছেন নো। এখানে বেশিরভাগ জমির মালিক মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। কিন্তু আসামির ছাড়া পাওয়ার পর মঙ্গলিবেন আর কাজ পাচ্ছেন না। যার ফলে তীব্র আর্থিক অনটন দেখা দিয়েছে। তবে ১১ জন আসামি ছাড়া পাওয়ার পর রাধিকাপুর গ্রামে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, এই দাবি মঙ্গলিবেন অস্বীকার করেছিলেন।
আসামিদের মুক্তিতে কোনও উৎসব হয়নি
স্থানীয় চিকিৎসক নীলেশ বামানিয়া বলেছেন, 'আসামিরা যে মুক্তি পেয়ে গ্রামে প্রবেশ করেছে, তা আমি সংবাদমাধ্যম মারফৎ জানতে পেরেছি।' তিনি মন্তব্য করেন, ১১ অগাস্টের দিন গ্রাম শান্ত ছিল। কোনও অশান্তি বা উত্তেজনা হয়নি। কোনও মিছিল বের হয়নি বলেও স্থানীয় চিকিৎসক মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, 'আমার বাড়ি প্রধান সড়কের ওপর। ডিজে বাজিয়ে মিছিল করে আসামিদের স্বাগত জানালে জানতে পারতাম।' পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, 'আসামিরা অত্যন্ত দরিদ্র পারিবারের। তাদের নিয়ে বিতর্ক বন্ধ হোক।'