|
নাসিম যেন মিয়াঁদাদ
বাবর আজম আফগানিস্তানকে হারানোর পর বলেন, যেহেতু টি ২০ ফরম্যাট এবং নাসিম শাহ-র ব্যাটিং দেখেছি তাই জেতার বিষয়ে একটা বিশ্বাস ছিলই। নাসিমের এই ইনিংস আমাকে শারজায় জাভেদ মিয়াঁদাদের ছক্কাকে স্মরণ করাল। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা রবি শাস্ত্রী তখন বাবরকে বলেন, ওই ম্যাচ আমি খেলেছিলাম। ধন্যবাদ মনে করানোর জন্য। উল্লেখ্য, মিয়াঁদাদ যখন ৩৬ বছর আগে মারা ওই ছক্কায় ভারতকে হারিয়ে পাকিস্তানকে অস্ট্রেলেশিয়া কাপ (Austral-Asia Cup) জিতিয়েছিলেন তখন বাবরের জন্মই হয়নি। যদিও ক্রিকেটীয় রূপকথায় স্থান পাওয়া ওই ছক্কা সোশ্যাল মিডিয়া ঘাঁটলেই দেখা যায়।
|
শারজা ও ছক্কা
১৯৮৬ সালের ওই ফাইনালে কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারত ৭ উইকেটে ২৪৫ তুলেছিল। এরপর দলের ৯টি উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও মিয়াঁদাদ শেষ বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন করেন। যাঁর বলে মিয়াঁদাদ ছক্কাটি মেরেছিলেন সেই চেতন শর্মা ওই ম্যাচে তিন উইকেট নিয়েছিলেন, তিনি এখন ভারতের নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধান। ১১৪ বলে ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন মিয়াঁদাদ। ওই ম্যাচে শাস্ত্রীর মতোই খেলেছিলেন পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রম। তিনিও এবারের এশিয়া কাপে রয়েছেন ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায়। নাসিমের ইনিংসের প্রশংসা যেমন ওয়াসিম আক্রমও করেছেন, তেমনই বাবর আজম থেকে শুরু করে ম্যাচের সেরা শাদাব খানের মুখেও নাসিমের ছক্কার কথাই। সবাই বলছেন, টেনশন কাটিয়ে স্বস্তি দেওয়া এই ছক্কা অনেক দিন মনে থাকবে।
|
নাসিমের স্মরণীয় ইনিংস
১৮.২ ওভারে হ্যারিস রউফ আউট হওয়ার পর দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন নাসিম শাহ। যিনি গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে দুরন্ত বোলিং করেছিলেন। যদিও জেতাতে পারেননি। নাসিমের কথায়, ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই লক্ষ্য ছিল সিঙ্গলস নিয়ে আসিফ আলিকেই স্ট্রাইকে রাখা। কিন্তু ওই ওভারেই আসিফ আলি আউট হওয়ার পর নিজেকে বলি, যা করতে হবে এবার আমাকেই করতে হবে। কেন না, এই ধরনের ম্যাচে নয় উইকেট পড়ে গেলে কেউই জয়ের আশা বিশেষ করেন না। কিন্তু আমার নিজের উপর বিশ্বাস ছিল। অনুশীলনে বড় শট মারার প্র্যাকটিস করে থাকি। এই জয় তাই আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে রইল। অনেকে ভুলেই গিয়েছেন যে আমি বোলার!
|
নিয়মভঙ্গ নয়
এরই মধ্যে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে সংশয় ছিল ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে আসিফ আলি ক্যাচ আউট হওয়ার পর নন-স্ট্রাইকিং এন্ডে থাকা নাসিমের পরবর্তী বলটি খেলা নিয়ে। ওই বলটিতে এক রান নেওয়ার পরই ২০তম ওভারের প্রথম ২ বলে দুটি ছক্কা হাঁকান নাসিম। এমসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ব্যাটার ক্যাচ দিয়ে আউট হলে যদি দুই ব্যাটারের মধ্যে ক্রসও হয় তাহলে যিনি নতুন ব্যাট করতে আসবেন পরের বল তিনিই খেলবেন। সে কারণেই আসিফের আউটের পরের বল নাসিমকে খেলতে দেখে অনেকেই অবাক হন। কেন না, ওই বল মহম্মদ হাসনাইন খেললে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেও পারতো। তবে এ ক্ষেত্রে কোনও ভুল হয়নি। কেন না, এমসিসি-র নতুন নিয়ম চালু হবে আগামী মাস থেকে। বিসিসিআই আইপিএলে এই নিয়ম চালু রাখলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এখনও চলছে পুরানো নিয়মেই। আর সেই নিয়মেরই ফায়দা তুলে পাকিস্তান ফাইনালে পৌঁছে গেল নাসিমের রূপকথার ইনিংসের সৌজন্যে।