ভারতে এখন যেন জ্বরের মরশুম চলছে। একদিকে, ঘরে ঘরে জ্বরের রোগীদের দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তেমনি চিকিৎসকদের বর্হিবিভাগে বাড়ছে রোগীদের ভিড়। রোগীরদের বেশিরভাগ এক উপসর্গ। প্রবল জ্বর, তারসঙ্গে গা-হাত-পা ব্যথা, মাথার যন্ত্রণা, দুর্বলতা। অন্যদিকে, বেশিরভাগ রোগীদের উপসর্গ এক হলেও ভিন্ন ভিন্ন রোগের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ মশা বাহিত ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার আক্রান্ত হচ্ছেন তো, কেউ ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। কেউ আবার করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। সব মিলিয়ে চিকিৎসকদের অবস্থা নাজেহাল।
দিল্লি ভিত্তিক শ্রী বালাজি অ্যাকশন মেডিকেল ইনস্টিটিউটের শ্বাসযন্ত্রের ওষুধের ইউনিট প্রধান অনিমেষ আর্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জুন থেকে আমরা এই জ্বরের প্রকোপ লক্ষ্য করছি। এই জ্বরের পাশাপাশি একাধিক উপসর্গ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। যেমন কাশি, গলাব্যথা বা জ্বালা, সর্দি। অন্তত দুই তিন এই উপসর্গগুলো স্থায়ী হচ্ছে। এক পরিবারের কোনও একজন সদস্য আক্রান্ত হলে, লেই পরিবারের বাকি সদস্যরাও অল্প সময়ের জন্য হলেও সংক্রমিত হচ্ছেন। যদিও ঋতু পরিবর্তনের জন্যই বেশিরভাগ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই জ্বরকে মূলত ভাইরাল ফিভার বলা হয়ে থাকে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যাঁরা হালকা ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। গুরুতপ ইনফ্লুয়েঞ্জা সি ও সোয়াই ফ্লুতে আক্রান্ত হলে সুস্থ হতে বেশ খানিকটা সময় লাগছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনেকক্ষেত্রেই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রোগীরা ইনফ্লুয়েঞ্জা ও করোন উভয়ক্ষেত্রে একসঙ্গে সংক্রমিত হয়েছেন। তবে এখন করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমে গিয়েছে। তবে বর্তমানে ডেঙ্গুর সংক্রমণ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
লখনউয়ের চিকিৎসক সাক্ষী মানচন্দা জানিয়েছেন, এখন বেশিরভাগ রোগী জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। উপসর্গগুলো মোটামুটি এক হলেও তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসকদের অনেক সময় ধাঁধাঁয় পড়তে হচ্ছে। পরীক্ষার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে সূক্ষ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন, ডেঙ্গুতে শরীরে ব্যথা বেশি হয়। তবে এই ধরনের উপসর্গের থেকে বেশি পরীক্ষায় জোর দেওয় হচ্ছে। পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসার ওপরেই চিকিৎসকরা জোর দিচ্ছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
বেঙ্গালুরুর ফোর্টিসের চিকিৎসক সুধা মেনন জানিয়েছেন, প্রথম থেকে সঠিক চিকিৎসার জন্য পরীক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ সময় শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। তারপর তা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আমরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অনেক ভাইরাস ফিভারে আক্রান্ত রোগী দেখেছি। সেখানে কোভিড, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সোয়াইন ফ্লু হল বায়ু বাহিত। ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া হল মশা বাহিত। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলো এক। প্রাথমিক স্তরে মাথা ব্যথা, জ্বর, ইত্যাদিগুলো দেখতে পাওয়া যায়। তবে এই ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকদের পরামর্শ ও রোগ নির্নয়ের ওপর জোর দিয়েছেন।