চিনে করোনা সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সংক্রমণের হারও অনেকটা কমেছে। কিন্তু চিনা প্রশাসনের শূন্য কোভিড নীতির জেরে ফের লকডাউনে ঘর বন্দি ৬৫ মিলিয়ন মানুষ। চিনা প্রশাসন জাতীয় ছুটির দিনে দেশের অভ্যন্তরে নাগরিকদের ভ্রমণ এড়াতে, পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনতে লকডাউন ঘোষণা করেছে। বেজিং জানিয়েছে, লকডাউন ঘোষণা না করলে, চিনের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
সোমবার চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টার দেশে ১,৫৫২ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বেশিরভাগের শরীরে কোনও উপসর্গ নেই। চিনের দক্ষিণ পশ্চিমের শহর চেংডুতে বর্তমানে ২১ মিলিয়ন নাগরিক ঘর বন্দি। পূর্বের বন্দর শহর তিয়ানজিনে ১৪ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে স্থানীয় প্রশাসন সমস্ত স্কুলগুলোকে অনলাইনে পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। জানা গিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র দুজনের শরীরে উপসর্গ দেখতে পাওয়া গিয়েছে।
চিনে করোনা সংক্রমণের হার অনেকটা কমে গেলেও প্রশাসন এখনও লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, আক্রান্তদের ঘনিষ্ঠদের কোয়ারেন্টাইনের ওপর জোর দিয়েছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে থেকে ১০ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর জাতীয় ছুটির দিন। এই ছুটির দিনে সাধারণ মানুষের ঘুরতে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেশি। যার ফলে ভিড় ও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কয়েকগুন বেড়ে যায়। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিনে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। চিনের একাধিক জায়গায় নতুন করে লকডাউন ঘোষণার জেরে টিনের প্রায় ৬৫ মিলিয়ন মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন।
চিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, চেংডু সহ মোট ৩৩টি শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কঠোরভাবে লকডাউনের জেরে চিনের সাধারণ নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতেও সমস্যা হয়। খাবার, পানীয়জলের আকাল দেখা দেয়। যার জেরে চিনের সাধারণ নাগরিকদের ব্যাপকভাবে সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তবে জাতীয় ছুটির দিন উপলক্ষে চিনের ৩৩টি শহরে কতদিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, তা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে স্পষ্ট নয়।
শূন্য কোভিড নীতির জেরে চিনের বৃহত্তম ও বাণিজ্যিক শহর সাংহাইতে পাঁচ সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কঠোর লকডাউনের জেরে চিনের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় অর্থনীতি ভেঙে পড়ে। শহর জুড়ে খাবারের তীব্র আকাল দেখা দেয়। ঘর বন্দি সাংহাইয়ের বহু বাসিন্দাকে অনাহারে দিন কাটাতে হয়। প্রশাসনের তরফে পচা খাবার দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। যার ফলে সাংহাইয়ের সাধারণ মানুষ স্বভাব বিরুদ্ধ পথে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। শুধু তাই নয়, বহু বিদেশি নাগরিক চিন ছেড়ে চলে যান।