সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় গ্রেফতার হওয়া পাকিস্তানি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে ওই জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুলিতে আহত হন। জম্মু ও কশ্মীরের রাজৌরির একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। শনিবার সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। মৃত্যুর আগে পাক জঙ্গি জানায়, ভারতে হামলার জন্য পাক সেনাবাহিনীর কর্নেল তাঁকে বড় অঙ্কের অর্থ দিয়েছিল।
তাবরাক হুসেন নামের ওই জঙ্গিকে নওশেরা সেক্টরে গ্রেফতার করা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের কোটলির সবজকোট গ্রামের বাসিন্দা। সেনাবাহিনীর ৪০ কমান্ডার ও ব্রিগেডিয়ার কপিল রানা ২১ অগস্ট এলওসি থেকে দুই থেকে তিন জন জঙ্গির কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছিল। এক জঙ্গি ভারতীয় সীমান্তের খুব কাছে চলে আসে এবং কাঁটাতার কেটে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করে। সেই সময় সেনাবাহিনী সতর্ক করলে ওই জঙ্গি পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সেনাবাহিনীর গুলিতে ওই জঙ্গি আহত হয়। সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদে ওই জঙ্গি ভারতের সেনাঘাঁটিতে হামলার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে। এর বিনিময়ে পাকিস্তানের এক কর্নেল তাদের ৩০,০০০ হাজার টাকা দেন বলে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি জানিয়েছে।
ভারতীয় সামরিক বাহিনী সূত্রের খবর, ভারতে অনুপ্রবেশের সময়, সেনবাহিনীর গুলিতে গুরুতর জখম হয় ওই জঙ্গি। সেনা হাসপাতালে চিকিৎসার হয়। রক্তের প্রয়োজনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই জঙ্গিকে সাহায্য করে। সেনা হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল, জঙ্গিকে একজন রোগী হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেই হিসেবেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। জঙ্গি হওয়ার জন্য তার চিকিৎসার কোনও গাফিলতি হয়নি বলে সেনা হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল।
দীর্ঘ জিজ্ঞাবাদে ওই জঙ্গি জানিয়েছে, সঙ্গীদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে সে ধরা পড়ে। ওই জঙ্গি জানিয়েছে, 'পাকিস্তানে আমি ছয় মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছি। লস্কর-ই-তইবা এবং জইশ ই মহম্মদের বেশ কয়েকটি ক্যাম্পে আমার প্রশিক্ষণ হয়। এই ক্যাম্পগুলো মূলত পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পরিচালনা করে।' হুসেন স্বীকার করেছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর তিনটি ক্যাম্পে হামলা চালানোর জন্য আগাম খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেছিল। তারপরেই পাকিস্তানের কর্নেল চৌধুরী তাকে হামলার অনুমতি দিয়েছিল। এই কারণে তাকে ৩০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। হুসেন জানিয়েছে, পাক গোয়েন্দা সংস্থার এক আধিকারিক কর্নেল ইউসুফ চৌধুরী তাকে ভারতে হামলার নির্দেশ দিয়েছিল। পাক সেনাবাহিনীর মেজর রজাক তাকে প্রশিক্ষণ দেয় বলে ওই জঙ্গি জানিয়েছে।