কী বললেন কেরলের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এক বিবৃতিতে কেরলের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজা বলেন, 'ব়্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার কখনই একজন রাজনীতিবিদকে দেওয়া হয় না। আমি কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য। তাই আমি এই সম্মান গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' তিনি বলেন, 'একজন সাধারণ মানুষ ও দলীয় কোর কমিটির সদস্য হিসেবে পুরস্কারের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখিয়ে আমি তা গ্রহণ করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী না করার মতো এই সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া সিপিআই-এমের একটি 'ঐতিহাসিক ভুল'। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুটি ঘটনা সম্পূর্ণ আলাদা। এই দুই ঘটনার কোনও তুলনা হয় না।
করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা
করোনা মহামারীর সময় সারা বিশ্বে চরম অনিশ্চয়তা দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। করোনার মোকাবিলা করতে কেরলের তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি যেভাবে রাজ্যকে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাতে সারা বিশ্ব তাঁর কাজকে স্বীকৃতি জানিয়েছিল। সেই কাজের জন্য ব়্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম তালিকাভুক্ত করা হয়।
দলের সিদ্ধান্ত সম্মান প্রত্যাখ্যান
ব়্যামন ম্যাগসেসের ফাইন্ডেশনের তরফে জুলাইয়ের শেষের দিকে কেকে শৈলজার সঙ্গে ইমেল মারফত যোগাযোগ করে। সেই সময় তাঁকে পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম নথিভুক্ত করার কথা জানানো হয়। পুরস্কার গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁর সম্মতি জানতে চাওয়া হয়। সেই সময় সিপিআই-এমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ার কারণে শৈলজা গোটা বিষয়টি দলকে জানান। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, দলের সঙ্গে আলোচনার পরেই তিনি এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তারপরেই তিনি এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত নেন।
সিপিআই-এমের নেতাদের দাবি
কেরলের প্রবীণ সিপিআইএম নেতা বলেন, শৈলজার ওপর করোনা মহামারীর সময় একটি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এর বাইরে তাঁর ভূমিকা নেই। তিনি কোনও একক প্রচেষ্টায় করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেননি। কেরল সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজ্যকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাই তাঁর এই পুরস্কার গ্রহণের কোনও অর্থ নেই।
পুরস্কার না নেওয়ার নেপথ্যে কারণ
সিপিআই-এম সূত্রের খবর, ফিলিপিন্সে ব়্যামন ম্যগাসেসে কমিউনিস্ট গেরিলাদের পরাস্ত করতে কঠোর ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁর নামাঙ্কিত পুরস্কার গ্রহণ করলে ভবিষ্যতে দল অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। সেই কারণেই এই পুরস্কার গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআই-এম।
সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সমর্থকরা
দলের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন সিপিআই-এমের একাধিক কর্মী সমর্থকরা। কোট্টোয়াম ভিত্তিক ব্যবসায়ী তথা সিপিআই-এমের সমর্থক সজীব থমাস জানিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন নিজে একা লাইম লাইটে থাকতে চান। দলের অভ্যন্তরে বা মন্ত্রিসভায় কেউ তাঁর থেকে জনপ্রিয় হোক, তা তিনি কখনই চান না। সেই কারণেই শৈলজাকে এই সম্মান নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।