টাটা গোষ্ঠী প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রির মৃত্যু হল মুম্বইয়ের এক পথ দুর্ঘটনায়। রবিবার মুম্বইয়ের পালঘরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। তাঁর গাড়িটি ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে মুম্বই পুলিশ। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
গুজরাতের আমেদাবাদ থকে মুম্বই আসছিলেন। তখনই তাঁর গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে। তাঁর গাড়িতে চারজন ছিলেন। চারজনকেই গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসসাপাতে নিয়ে গেলে তঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বাকি তিনজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে গাড়িটি প্রচন্ড গতিতে ছিল। পরে হাসপাতালে আরও এক জনের মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, গাড়িটিতে কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ ছিল কি না। কী কারণে সেতুর ডিভাইডের ধাক্কা মারল গাড়িটি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্য কোনও গাড়ির কারণে এই দুর্ঘটনা কি না, তাও জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পুলিশ চারজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা সাইরাসকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
মুম্বইয়ে জন্ম শিল্পপতি সাইরাস মিস্ত্রির। তিনি টাটাগোষ্ঠীর ষষ্ঠতম চেয়ারম্যান। টাটা পদবি ছাড়া দ্বিতীয় চেয়ারম্যান তিনি। ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ছিলেন। টাটা গোষ্ঠীতে তাঁর উত্তরণ হয় রতন টাটা সরে যাওয়ার পর। ২০১২ সালে রতন টাটার স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। তিনি ছিলেন সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীর প্রতিনিধি। টাটা সন্সের সবথেকে বেশি শেয়ার হোল্ডার ছিলেন তিনি।
২০০৬ সালে টাটা সন্সের বোর্ড থেকে তাঁর বাবা পালোনজি মিস্ত্রি অবসর নেন। তারপরই সাইরাস যোগ দেন বোর্ডে। ৬ বছরের মধ্যেই তিনি হয়ে যান চেয়ারম্যান। ২০১৬ সালে তাঁকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে নটরাজন চন্দ্রশেখরনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে তাঁর জীবনরথ থেমে গেল। ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনা কেড়ে নিল তাঁর জীবন।
সাইরাস মিস্ত্রি ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত পার্সি পরিবারের সদস্য। পালোনজি মিস্ত্রির সুপুত্র সাইরাস পড়াশোনা করেন লন্ডনে। লন্ডন বিজনেস স্কুল ও লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে পাস করে তিনি ভারতের বিজনেস টাইকুন হয়ে ওঠেন। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে টাটা গোষ্ঠীর সর্বোচ্চ স্থানে উঠে আসেন স্বল্প বয়সেই। কিন্তু এভাবে যে তাঁর উত্তরণের পথ ঠেমে যাবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করা যায়নি। সাইরাসের মৃত্যুতে শোকের ছায়া তাঁর পরিবার-পরিজন ছাড়াও ভারতের বাণিজ্য মহলেও।