|
হিসেব কষে জয়
পাকিস্তানের ইনিংসে মাত্র চারটি ওভারেই কোনও বাউন্ডারি আসেনি, তিনটিই রবি বিষ্ণোইয়ের ওভার। একটি চতুর্থ ওভারে যেটিতে বাবর আজম আউট হয়েছিলেন। তারপর অষ্টম ওভার। এ ছাড়া সব ওভারেই চার বা ছয় মেরে হিসেব কষে রান তাড়া করতে থাকে পাকিস্তান। শেষ ১০ ওভারে দরকার ছিল ১০৬ রান। ১০ ওভারের শেষে ভারতের স্কোর যেখানে ছিল ৩ উইকেটে ৯৩, সেখানে পাকিস্তানের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৭৬। একাদশ ওভারে যুজবেন্দ্র চাহাল ও দ্বাদশ ওভারে রবি বিষ্ণোই ১০ রান করে দেন। ত্রয়োদশ ওভারে অর্শদীপ সিংয়ের বলে ১১ রান তোলার পর হার্দিক পাণ্ডিয়া ১৪তম ওভারে বল করতে এলে পাকিস্তান ১২ রান তোলে। ১৫তম ওভারে যুজবেন্দ্র চাহাল ১৬ রান দেওয়ায় শেষ পাঁচ ওভারে পাকিস্তানের জিততে ৪৭ রান দরকার ছিল।
|
বদলা নিলেন বাবরা
ষোড়শ ওভারে বোলিং করতে এসে তৃতীয় বলেই তিনি সাজঘরে ফেরান বিপজ্জনক মহম্মদ নওয়াজকে। ব্যাটিং অর্ডারের উপরে উঠে এসে নওয়াজ ২০ বলে ৪২ রান করেন। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ৬টি চার ও ২টি ছয়। এই ওভারে ভুবনেশ্বর কুমার মাত্র চার রান দেন, কোনও বাউন্ডারি পায়নি পাকিস্তান। ফলে ৪ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে ৪৩। ৩.৪ ওভারে বাবর আজম রবি বিষ্ণোইয়ের শিকার হয়েছিলেন ১০ বলে ১৪ রান করে, দলের ২২ রানের মাথায়। এরপর ৮.৪ ওভারে পাকিস্তানের দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ৬৩ রানে। ফখর জামান যুজবেন্দ্র চাহালের বলে আউট হন ১৮ বলে ১৫ রান করে। সেখান থেকে মহম্মদ রিজওয়ান ও নওয়াজ ৪১ বলে ৭৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন।
অনবদ্য রিজওয়ান
চার ওভারে জিততে দরকার ৪৩। ১৭তম ওভারটি করতে এসে হার্দিক পাণ্ডিয়া পঞ্চম বলে সাজঘরে ফেরান মহম্মদ রিজওয়ানকে। ভারতের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি ২০ আন্তর্জাতিক খেলতে নেমে দ্বিতীয় অর্ধশতরান রিজওয়ান পূর্ণ করেছিলেন ৩৭ বলে। আউট হলেন ৫১ বলে ৭১ রান করে। তাঁর ইনিংস সাজানো ৬টি চার ও ২টি ছয় দিয়ে। হার্দিক এই ওভারে মাত্র ৯ রান দেন। ফলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৩ ওভারে দরকার ৩৪ রান। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলটি ওয়াইড হলে ভারত রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় বল আসিফ আলির ব্যাটে লাগেনি। এর ঠিক পরের ডেলিভারিতেই আসিফের সহজ ক্যাচ ফেলেন অর্শদীপ সিং। বিষ্ণোই এই ওভারে দেন ৮ রান, এই ওভারেও পাক ব্যাটাররা বাউন্ডারি মারতে পারেননি। ১৯তম ওভারে রোহিত শর্মা অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর কুমারের উপর আস্থা রাখলেও তিনি ১৯ রান দিয়ে বসেন। এতেই ম্যাচ পাকিস্তানের দিকে ঝোঁকে। শেষ ওভারে পাকিস্তানের জিততে দরকার ছিল ৭ রান। চতুর্থ বলে আসিফ আলি (৮ বলে ১৬)-কে আউট করেন অর্শদীপ। কিন্তু পরের বলেই ২ রান নিয়ে পাকিস্তানকে জিতিয়ে দেন ইফতিখার আহমেদ। খুশদিল শাহ অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ১৪ রান করে।
|
ভারতের অনভিজ্ঞ বোলিং
ফাইনালে যেতে ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াল শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান ম্যাচ। মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা ম্যাচ, চিন্তায় রাখবে অনভিজ্ঞ বোলিং। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বোলিং আক্রমণে অভিজ্ঞতা বাড়াতে মহম্মদ শামিকেও দরকার। এদিন আবেশ খান জ্বরের জন্য ছিলেন না। ফলে হার্দিক পাণ্ডিয়াকে তৃতীয় সিমার হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। হার্দিক ৪ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ১ উইকেট পান। যুজবেন্দ্র চাহাল ১টি উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৪৩ রান দেন। ভুবনেশ্বর কুমার ৪ ওভারে ৪০ রান দেন, তিনিও একটি উইকেট পেয়েছেন। অর্শদীপ সিং ৩.৫ ওভারে ২৭ রান দিয়ে একটি এবং রবি বিষ্ণোই ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। তবে অর্শদীপ আসিফের ক্যাচ যেভাবে হাতছাড়া করেন তা ভারতের হার ত্বরান্বিত করল তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
ভালো শুরুতেও ১৮১!
এদিন টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। ভারত ২০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান তোলে। চারটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্য়ে ৪৪ বলে ৬০ রান করেন বিরাট কোহলি। ওপেন করতে নেমে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ১৬ বলে এবং লোকেশ রাহুল ২০ বলে ২৮ রান করেন। ভারতের ওপেনিং জুটিতে ওঠে ৫৪ রান। টি ২০ আন্তর্জাতিকে রোহিত-রাহুল জুটি এই নিয়ে ১৪ বার ৫০ বা তার বেশি রান করল। এদিন ভারতীয় জুটি পিছনে ফেলে দিল কেভিন ও ব্রায়েন ও পল স্টার্লিংয়ের ১৩ বার ৫০ বা তার বেশি রান করার নজির। ভারত এদিন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টি ২০ আন্তর্জাতিকে পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে সবচেয়ে বেশি রান করার পাশাপাশি দ্রুততম দলগত ৫০ ও ১০০ রানও করে। শাদাব খান দুটি এবং নাসিম শাহ, মহম্মদ হাসনাইন, হ্যারিস রউফ ও মহম্মদ নওয়াজ একটি করে উইকেট নেন।