সমাজকর্মী তিস্তা শীতলওয়াড়কে কেন দুমাস ধরে হেফাজতে রাখা হয়েছে তা নিয়ে কার্যত সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়তে হল গুজরাট হাইকোর্টকে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত তাঁর পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছেন, এমন কোনও অভিযোগ নেই যাতে তিস্তাকে জামিন দেওয়া যায় না। কোনও মহিলার সঙ্গে এমন আচরণ আগে করা হয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্টর ডিভিশন বেঞ্চ।
গত দুমাসে কোনও চার্জশিট পেশ করা হয়নি বলেও উল্লেখ করেছে আদালত।
গুজরাট হাইকোর্ট তিস্তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। আর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেম তিস্তা। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট, বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে ছিল এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি। তিস্তার পক্ষে এদিন সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল। অন্যদিকে সরকারের হয়ে সওয়াল করেন সলিসিটার জেলারেল তুষার মেহেতা।
গুজরাট হাইকোর্টের নির্দেশে কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি রয়েছে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল এই বেঞ্চ। প্রথমত আবেদনকারী দুমাস ধরে হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও কোনও চার্জশিট পেশ করা হয়নি। দ্বিতীয়ত তিস্তার বিরুদ্ধে যে এফআইআর করা হয়েছে তাতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের থেকে বেশি কিছু নেই। হাইকোর্ট গত ৩ অগাস্ট যে নোটিশ দিয়েছে ছয় সপ্তাহ পর তাঁর উত্তর চাওয়া হয়েছে। কেন এত বেশি সময় নেওয়া হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিরা এদিন উল্লেখ করেন কোনও খুন কিংবা আঘাত করার মতো কোনও গুরুত্বপূর্ণ অপরাধ ঘটেনি।
স্পেশাল বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে, জামিন খারিজ হওয়ার মতো কোনও অভিযোগ নেই। প্রধান বিচারপতির দাবি, সমাজকর্মী তিস্তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা খুবই সাধারণ। দেশদ্রোহের মতো মারাত্মক কোনও ধারা নেই বলেও উল্লেখ আদালতের। বিচারপতি ললিত জানান, এমন মামলার ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট সময় অভিযুক্তকে হেফাজতে রাখার পর যদি তদন্তের ক্ষেত্রে কোনও বাঁধা না আসে তাহলে অভিযুক্তের প্রতি সন্তোষজনক আচরণ করতে হবে।
এদিন প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কোনও মহিলার ক্ষেত্রে এমন উদাহরণ আছে যেখানে হাইকোর্ট ছিয় সপ্তাহ পর উত্তর চেয়েছে। জবাবে তুষার মেহতা বলেন, তিস্তার মতো অপরাধ করেছে এমন মহিলার উদাহারণ আমার জানা নেই। প্রধান বিচারপতি সলিসিটার জেনবারেলের কাছে জানতে চেয়েছেন তদন্ত করতে ঠিক কতটা সময় লাগতে পারে। আদালত আরও উল্লেখ করেছে, এমন কোনও বিরল মামলা নয় যে সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। আগামীকাল শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।