কর্নাটকের হুবলি-ধারওয়াদের ইদগাহ ময়দানে গণেশ চতুর্থী উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল জোর কদমে। মঙ্গলবার রাতেই কর্নাটক হাইকোর্ট তার আগের নির্দেশ সংশোধন করার আবেদনকে খারিজ করে জানায় যে ইদগাহ ময়দানে গণেশ মূর্তি স্থাপন করা যাবে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট জানায় যে হুবলির যে ময়দান তাতে কোনও ত্রুটি নেই এবং এখানে আচার-অনুষ্ঠানের অনুমতির জন্য চ্যালেঞ্জ করে যে আবেদন করা হয় তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। অর্থাৎ ধারওয়াদ ময়দানে গণেশ চতুর্থী উদযাপনের যে নির্দেশিকা কর্তৃপক্ষ দিয়েছিল, তা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের নির্দেশ সামনে আসার পরই রাজ্য সরকার দ্রুত গণেশ চতুর্থির প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। ময়দানে বসে গণেশ মূর্তি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীও হুবলি ময়দান পরিদর্শনে আসেন এবং হাইকোর্টের নির্দেশকে সাধুবাদ জানান এবং তিনি এও জানিয়েছেন যে গণেশ উৎসবের কখনও বিরোধীতা করা করা উচিত নয়। মন্ত্রী বলেন, 'কর্নাটক হাইকোর্ট ভালো রায় দিয়েছে। আমি এটাকে স্বাগত জানাই। অযথাই বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিবেশী এই ইদগাহ ময়দান সরকারের সম্পত্তি। দু'বার নমাজের অনুমতি দেওয়া ছাড়া এটা কর্পোরেশনের সম্পত্তি। তাই এটা নিয়ে বিতর্কের কোনও সুযোগ ছিল না, কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল সহ মুষ্টিমেয় অংশ এর বিরোধিতা করেন। এটা কোনও ভালো উন্নয়নের নিদর্শন নয়। কেই এই নির্দেশকে অমান্য করবেন না এবং আগামী তিনদিন সকলে শান্তপূর্ণভাবে উৎসবের মজা নিন। আমি আবেদন করছি (সম্প্রদায়ের কাছে) আমরা নমাজে বাধা দিই নি, সেরকমই গণেশ উৎসবকেও বাধা কেউ দিক চাই না।'
মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নির্দেশ অনুযায়ী, গণেশ পুজো বিধি অনুযায়ী হবে এবং তিনদিন ধরে এই উৎসব চলবে। রানী চেন্নামা ময়দান গজানন উৎসব মহামণ্ডলের আহ্বায়ক কে গোবর্ধন রাও বলেন, 'রানী চেন্নামা ময়দান মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের সম্পত্তি, তাই আমরা সমিতি মহামণ্ডলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করব যে গণপতি উৎসবের অনুমতি এখানে দেওয়া হোক। আমরা আধঘণ্টার মধ্যে গণেশের মূর্তি স্থাপিত করে দেব।' তিনি আরও জানিয়েছেন যে প্রচলিত রীতি মেনেই পুজো হবে এবং তিন ধরে উৎসব চলবে কর্পোরেশনের নির্দেশ অনুযায়ী।
প্রসঙ্গত, বেঙ্গালুরুতে বিতর্কিত ইদগাহ ময়দানে গণেশ চতুর্থী উদযাপন করা যাবে না বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট। কর্ণাটক সরকার বিতর্কিত ইদগাহ ময়দানে গণেশ চতুর্থী উদযাপনের অনুমতি দেয়। সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ওয়াকফ বোর্ড সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়েছিল। পরে বিষয়টি হাইকোর্টে যায়। কর্নাটক হাইকোর্ট হুবলি-ধারওয়াদের ইদগাহ ময়দানে গণেশ উৎসবের ওপর নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দেয়। হাইকোর্ট, যুক্তিগুলি শোনার পরে, পর্যবেক্ষণ করেছে যে হুবলি মামলার তথ্যগুলি বেঙ্গালুরুর ইদগাহ ময়দান সংক্রান্ত মামলার ঘটনা থেকে ভিন্ন ছিল যা সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল। বেঞ্চ উল্লেখ করেছে যে বেঙ্গালুরুতে জমির মালিকানা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের সামনে উঠে এসেছিল। তবে হুবলিতে জমির মালিকানা নিয়ে কোনও বিরোধ ছিল না। উপরন্তু এই জমিটি সরকারের ছিল।