বিজেপির তিনদিনের প্রশিক্ষণ শিবির চলছে বিলাসবহুল বৈদিক ভিলেজে। সেখানে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব-সহ জেলা সভাপতি ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠ দেওয়া হচ্ছে। সুনীল বনশন রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক হয়ে আসার পর এই মন্থন শিবির হচ্ছে। এই মন্থন শিবির থেকে বিজেপি নেতাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হল তৃণমূলকে সরাতে তৃণমূল হওয়া যাবে না।
অর্থাৎ তৃণমূল যতই বুনো ওল হোক, তাঁদের বাঘা তেঁতুল হয়ে জবাব দেওয়া যাবে না। চরম পথ না নিয়ে নরম পথে মানুষের মন জয় করার রাস্তায় হাঁটতে চাইছে বিজেপি। সেইসঙ্গে তৃণমূল যে দুর্নীতিকে আশ্রয় করে ধ্বংসের পথ নিয়েছে, তাদের সরাতে গিয়ে বিজেপি যাতে খখনই এই চরম পথ অবলম্বন না করে, তার জন্যএ সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
তিনদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রথম থেকেই জলের নীতি-শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সেইসঙ্গে আগামী দনে বঙ্গ বিজেপির রণনীতি কী হবে, তার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেখানে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, তৃণমূলকে সরাতে গিয়ে তৃণমূলের মতো আচরণ করা যাবে না কিছুতেই। তৃণমূলকে সবক শেখাতে গিয়ে বিজেপি যেন কোনও ভুল করে না বসে।
সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন ইডির হাতে, গরু পাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তারপর তৃণমূল পড়েছে পাঁকে। তাঁদের গ্রেফতারি নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। তার ফায়দা তুলতে হবে অন্যভাবে। আন্দোলনের ঝড় বইয়ে দিতে হবে। কিন্তু কোনওভাবেই তৃণমূলের ভাষায় কথা বলা যাবে না। দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে।
কিন্তু ইতিমধ্যেই বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধেও উঠে পড়েছে দুর্নীতির অভিযোগ। একাধিক বিজেপি নেতা ও বিধায়কের নামে বেআইনি চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সিআইডি সেই মামলার তদন্তও শুরু করেছে। এই ধরনের অভিযোগ যেন কোনও নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
আর একটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিজেপির প্রশিক্ষক নেতাদের তরফে, তা হল- কোনওভাবেই বিতর্কিত মন্তব্য করা যাবে না। কটূ কথা দিয়ে আক্রমণ শানানো যাবে না। অর্থাৎ নরমপন্থা অবলম্বন করার বার্তা দেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে। মানুষ খারাপ চোখে দেখে, এমন কোনও কাজ করা যাবে না। বিজেপির লক্ষ্যই হল, মানুষের মনে পৌঁছনো। কেননা বিজেপি বুঝে গিয়েছে বাংলার মানুষের মনে পৌঁছতে না পারলে, শুধু দল ভাঙিয়ে আর দুর্নীতির ইস্যু তুলে ফায়দা লোটা যাবে না।