জল মাপছেন শশী
থারুর নিজে অবশ্য এখনই সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ্যে জানাননি। তবে তিনি যে জল মাপছেন তা ভালোই বুঝতে পারছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। থারুর নিজের লেখায় যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তা হলো, ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টি শীর্ষ নেতৃত্ব চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে যেভাবে বিশ্বকে আকৃষ্ট করেছে তেমনই জাতীয় স্বার্থকে আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে কংগ্রেসেরও নতুন সভাপতি বেছে নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন থারুর। এতে কংগ্রেসের প্রতি জনসমর্থনও বাড়বে বলে তাঁর আশা। থারুরের লেখায় উল্লেখ, আমি আশা করি অনেকেই সভাপতি পদপ্রার্থী হতে এগিয়ে আসবেন। দলের এবং দেশের প্রতি তাঁদের তাঁদের ভিশন মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর পক্ষে সহায়ক হবে।
স্বচ্ছ্ব ও নিরপেক্ষ পদ্ধতিতে ভোট
কংগ্রেসের কাজকর্ম পরিচালনার পদ্ধতিতে রদবদল চেয়ে যে ২৩ সিনিয়র নেতা ২০২০ সালের অগাস্টে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন থারুর। জানা গিয়েছে, কংগ্রেসের সভাপতি চূড়ান্ত করার বিষয়ে থারুর নিজেও অনেক নেতার সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছেন, নিয়মিত কথা বলছেন। তাঁর মতে, কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচন হোক স্বচ্ছ্ব ও নিরপেক্ষভাবে। এতে পার্টির শীর্ষস্তরে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা ভরাট করা যাবে, দলের নেতৃত্বের কাছে কর্মীদের বার্তা পৌঁছানোর পথ সুগম হবে, এবং দলের কর্মী ও আমজনতাও কংগ্রেসের শক্তিশালী সংগঠনের প্রতি আকৃষ্ট হবেন।
সভাপতি হতে চান অনেকেই?
উল্লেখ্য, যদি একাধিক প্রার্থী কংগ্রেস সভাপতি পদে লড়তে চান, তাহলে ২২ বছর পর সভাপতি পদের জন্য নির্বাচন হবে। ২০০০ সালে জিতেন্দ্র প্রসাদ সভাপতি নির্বাচনে লড়েছিলেন সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে। সেবারের ভোটে সোনিয়া পেয়েছিলেন ৭৫৪২ বৈধ ভোট, প্রসাদ পান মাত্র ৯৪টি ভোট। তবে ১৯৯৭ সালে সভাপতি নির্বাচনের ভোট জমজমাট হয়েছিল। সেবার সীতারাম কেশরীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন শরদ পওয়ার ও রাজেশ পাইলট। সেবার ইলেক্টোরাল রোল ম্যানেজ করার অভিযোগ উঠেছিল কেশরীর বিরুদ্ধে। এবারও ভোট হলে তা স্বচ্ছ্বভাবে হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে কংগ্রেসের অন্দরেই।
ইতিবাচক পদক্ষেপ দাবি
তথাকথিত জি-২৩-এর লেখা চিঠিতে সই করা গুলাম নবী আজাদ, কপিল সিব্বল ও জিতিন প্রসাদ কংগ্রেস ছেড়েছেন। এই আবহে থারুর লিখেছেন, দলের নীতি বা আদর্শের প্রশ্ন নিয়ে কারও চিন্তা বা সংশয় নেই। তবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে দল পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে সংশয় রয়েছে। যদিও সকলেই দেখতে চান পুনরুজ্জীবিত জাতীয় কংগ্রেস। দলকে দুর্বল করা বা বিভাজন তৈরি করতে কেউ চান না। দলকে শক্তিশালী ও পুরানো ছন্দে ফেরানোই সকলের লক্ষ্য। তবে ইতিবাচক পদক্ষেপ না নিলে যেভাবে বিভিন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হচ্ছে তাতে কর্মীদের মনোবল আরও ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেননি থারুর।