ব্যর্থ রাহুল
চোট সারিয়ে ভারতীয় দলে কামব্যাক করেছিলেন জিম্বাবোয়ে সফরে। তবে যে দুটি একদিনের আন্তর্জাতিকে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিলেন তাতে লোকেশ রাহুল একেবারেই ছন্দে ছিলেন না। পাকিস্তানের টি ২০ দলে অভিষেক হওয়া নাসিম শাহের গতির কাছে পরাস্ত হলেন রাহুল। গোল্ডেন ডাক নিয়ে সাজঘরে ফিরে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের কপালে বাড়ালেন চিন্তার ভাঁজ। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই রাহুলকে বোল্ড করেন নাসিম, বল রাহুলের ব্যাট ছুঁয়ে ভেঙে দেয় উইকেট। ১ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। এর ঠিক দুই বল পরেই বিরাট কোহলির ক্যাচ ফেলেন ফখর জামান। তৃতীয় স্লিপে যাওয়া ক্যাচ কঠিন হলেও জামান এটি ধরতে পারলে ভারত আরও বেকায়দায় পড়ত। পাওয়ারপ্লে-র ৬ ওভারে ভারতের স্কোর ছিল ১ উইকেটে ৩৮।
দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে আউট রোহিত-বিরাট
এরপর ভারতীয় ইনিংসে জোড়া আঘাত হানেন মহম্মদ নওয়াজ। বলা ভালো, রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি দুজনেই নওয়াজকে নিজদের উইকেট উপহার দিলেন দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে। অষ্টম ওভারের শেষ বলে নওয়াজ আউট করেন রোহিতকে। ১৮ বলে ১২ রান করেন ভারত অধিনায়ক। বিরাট কোহলি এদিন অবশ্য আগ্রাসী মেজাজেই ব্যাট করছিলেন। কিন্তু ৫০ রানের মধ্যে দুই ওপেনার আউট হওয়ার পর যখন উইকেটে টিকে থাকা উচিত ছিল, ঠিক তখনই বাজে শট খেলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন কোহলি। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক নিজের শততম টি ২০ আন্তর্জাতিকে করলেন ৩৪ বলে ৩৫, তিনটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে। এই ইনিংস ভাঙিয়ে তিনি টি ২০ বিশ্বকাপ অবধি খেলে দিলেও তাঁর এভাবে আউট হওয়া ভারতের সমস্যা বাড়ায়। ৯.১ ওভারে বিরাট আউট হলে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৫৩। ১৪.২ ওভারে সূর্যকুমার যাদবের উইকেটটি তুলে নেন নাসিম শাহ। ১৮ বলে ১৮ রান করে সূর্যও বোল্ড হন। ভারতের চতুর্থ উইকেটের পতন ৮৯ রানের মাথায়। চারে নামা রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে সূর্যর চতুর্থ উইকেট জুটিতে ওঠে ৩৬ রান। শেষ পাঁচ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫১ রান।
|
জাড্ডু-হার্দিক জুটিতে জয়
পাকিস্তান নির্ধারিত সময়ে ওভার সম্পূর্ণ করতে না পারায় শেষ তিন ওভারে ওভার-রেটের শাস্তির মুখে পড়ে। বৃত্তের বাইরে চারজন ফিল্ডার রাখতে বাধ্য হয় বাবর আজম। ক্র্যাম্পের সমস্যা সামলেও বোলিং করছিলেন নাসিম শাহ। ১৭তম ওভারে তাঁর চতুর্থ বলে রবীন্দ্র জাদেজাকে আম্পায়ার লেগ বিফোর দেন। রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান জাড্ডু। মাঠে শুশ্রূষা নিয়ে পরের বলটি করতে যান নাসিম, জাদেজা ছক্কা মারেন। শেষ বলে কোনও রান হয়নি। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন দাঁড়ায় ২১ রান। ১৯তম ওভারে হ্যারিস রউফের বলে হার্দিক তিনটি বাউন্ডারি-সহ ১৪ রান নেওয়ায় শেষ ওভারে ৭ রান দরকার ছিল। প্রথম বলে রবীন্দ্র জাদেজাকে আউট করেন মহম্মদ নওয়াজ। তবে চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন হার্দিক। তিনি চারটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ১৭ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
পাকিস্তানের বোলিং প্রশংসনীয়
পাকিস্তানের বোলাররা ডিউ ফ্যাক্টরের মধ্যেও দারুণ বোলিং করায় ম্যাচের ফয়সালা হলো শেষ ওভারে। অভিষেক ম্যাচে নাসিম শাহ ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। ৩.৪ ওভারে ৩৩ রান খরচ করে মহম্মদ নওয়াজ নেন তিনটি উইকেট।
ভারতের নজির গড়ে জয়
এর আগে, টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। পাকিস্তান ১৯.৫ ওভারে ১৪৭ রানে অল আউট হয়ে যায়। ৪২ বলে সর্বাধিক ৪৩ রান করেন মহম্মদ রিজওয়ান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম বোলার হিসেবে কোনও টি ২০ ম্যাচে ৪ উইকেট নিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। ৪ ওভারে ২৬ রানের বিনিময়ে চার উইকেট পাক ম্যাচে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সেরা পারফরম্যান্স। হার্দিক পাণ্ডিয়া তিনটি, অর্শদীপ সিং দুটি এবং আবেশ খান একটি উইকেট নেন। টি ২০ আন্তর্জাতিকে এই প্রথম ভারতের পেসাররাই পাকিস্তানকে অল আউট করে দিলেন।