তাইওয়ানে প্রণালীকে অবরুদ্ধ করে চিনের সামরিক মহড়ার বিষয়ে প্রথমবারের জন্য মন্তব্য করল নয়াদিল্লি। ভারত তাইওয়ান প্রণালী অবরুদ্ধ করে চিনের সামরিক মহড়াকে 'মিলিটারিজেশন' বা সামরিকীকরণ বলে উল্লেখ করেছে। নয়াদিল্লি সচারচর চিনের কোনও পদক্ষেপে সরাসরি কোনও মন্তব্য করে না।
শনিবার রাতে শ্রীলঙ্কায় ভারতের হাইকমিশন একটি বিবৃতি জারি করে। সেখানে তাইওয়ানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়। ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর চিনের সমারিক মহড়ার সমালোচনা করা হয়। চলতি মাসের শুরুতে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে সেখানে সামরিকীকরণের কথা উল্লেখ করা হয়নি। সেই সময় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে প্রকাশ করা বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ভারত সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে উদ্বিগ্ন। সামরিক মহড়ায় সংযম দেখানোর এবং এক তরফা কোনও পদক্ষেপ এড়ানোর জন্য আহ্বান করা হয়েছিল বিবৃতিতে। পাল্টা বেজিংয়ের তরফে জানানো হয়েছিল, নয়াদিল্লি এক চিন নীতি সম্পর্কে জ্ঞাত। চিন আশা করবে এই বিষয়ে নতুন করে ভারতকে বোঝাতে হবে না। কিন্তু শনিবার ভারত হাইকমিশনে রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য ভারতের অবস্থান যে স্পষ্ট করে দেয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তাইওয়ান প্রণালী ঘিরে চিনের সামরিক মহড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বিশ্বের একাধিক দেশ। জি-৭ সদস্যভুক্ত দেশ কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, ব্রিটেন, আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রীরা চিনের সামরিক মহড়ার সমালোচনা করেন। তাইওয়ানের উপকূলের একেবারে কাছেই চিনের নৌবাহিনী সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণ করে। যার জেরে তাইওয়ান প্রণালী অবরুদ্ধ হয়ে যায়। তাইওয়ানের ওপর দিয়ে চিন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। এর জেরে তাইওয়ানের বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ছোট্ট এই দ্বীপটি বিশ্বের থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াতে আমেরিকা চারটি যুদ্ধ জাহাজ দ্বীপরাষ্ট্রটির উপকূলে নোঙর করেছিল। এরমধ্যে দুটি যুদ্ধ জাহাজ বিমান পরিবহণে সক্ষম।
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার চিনের রাষ্ট্রদূত তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তিনি বলেন, আমেরিকার হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ানের সফরের প্রতিক্রিয়া দেখাতেই চিন এই ধরনের সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছিল। তবে তিনি তাইওয়ান ইস্যুর সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বন্দরে চিনের জাহাজ নোঙর করার কোনও যোগসূত্র নেই বলেই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দুটি একেবারে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। এদের মধ্যে দূর দূর পর্যন্ত কোনও যোগাযোগ নেই। ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজের শ্রীলঙ্কার বন্দরে নোঙর করার সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিকতা, স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা রক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি মন্তব্য করেন, এক চিন নীতি সমর্থনকারী দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা অন্যতম।