বিশ্বে মাঙ্কি পক্স ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক জল্পনা দেখা দিয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল সমকামীদের মধ্যেই মাঙ্কি পক্স ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। এই বিষয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর একটি সমীক্ষা প্রকাশ করে। সেখানে দেখা গিয়েছে, দিল্লিতে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনের বিষমকামী সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে।
প্রাথমিক একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দিল্লিতে যে পাঁচ জন মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে তিন জনের বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বা বিষমকামী সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে। বাকি দুই জনের এই ধরনের কোনও ইতিহাস নেই। সমীক্ষার রিপোর্টে জানানো হয়েছে, দিল্লিতে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত দ্বিতীয়, তৃতীয় ও পঞ্চম ব্যক্তি বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ২১ দিনের মধ্যে শরীরে উপসর্গ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। আক্রান্ত তিন ব্যক্তিই সমকামী বা উভকামী সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছে।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত ওই পাঁচ জনের কেউ গুটি বসন্ত বা মাঙ্কি পক্সের টিকা নেননি। এই পাঁচজনের মধ্যে তিন জন পুরুষ ও দুই জন মহিলা ছিলেন। এই পাঁচ জনের গড় বয়স ৩১.২ বছর। পাঁচ জনের শরীরেই হালকা উপসর্গ দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়াও বেশি জ্বর ওঠেনি তাঁদের।
কয়েক দশক আগে আফ্রিকার একাধিক দেশে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের হদিশ পাওয়া যায়। চলতি বছরে আমেরিকা, কানাডা সহ ইউরোপের একাধিক দেশে মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণের হার বাড়তে থাকে। সেই সময় একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, ইউরোপের আক্রান্তদের মধ্যে সমকামী পুরুষদের সংখ্যা বেশি ছিল। এরপরেই জল্পনা শুরু হয়, মাঙ্কি পক্সে মূলত সমকামীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। যদিও বার বার একাধিক সংস্থা এই জল্পনাকে গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে আহ্বান করে। সতর্ক করা হয়, এধরনের প্রচারে মাঙ্কি পক্স গুজবের জন্য ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ অনেকেই গুজবের জেরে নিজের রোগটা লুকিয়ে রাখতে চাইতে পারবে। যার জেরে মাঙ্কি পক্স মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে।
দিল্লি এইমসের ডার্মাটোলজিস্ট ও ভেনারোলজি বিভাগের অধ্যাপক সোমেশ গুপ্ত বলেন, করোনা মহামরীর সময় সংবাদমাধ্যমগুলো ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। করোনার উপসর্গ, সংক্রমণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য তুলে ধরেছিল। যা দেশের সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সাহায্য করেছিল। মাঙ্কি পক্সের ক্ষেত্রেও সংবাদমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, মাঙ্কি পক্সে শুধু সমকামীরা যৌন সম্পর্কের সময় আক্রান্ত হচ্ছেন না। সমস্ত ধরনের মানুষ মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হতে পারেন। মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেও সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। যেমন ধরা যাক, সুস্থ মানুষের পোশাকের সংস্পর্শে মাঙ্কি পক্সের আক্রান্তের চামড়া এলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। অনেক সময় একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া বা বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে আড্ডার মাধ্যমেও মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণ হতে পারে।
রাজধানীতে ক্রমেই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা, বিজেপির সঙ্গে সিরিয়াল কিলারের তুলনা কেজরিওয়ালের