বিহার থেকে বাংলায়
আগামী মাসে ভারত সফরে আসছে নিউজিল্যান্ড এ দল। সেই সিরিজের জন্য ভারতের এ দলে সুযোগ পেয়েছেন বাংলার তরুণ পেসার মুকেশ কুমার। বিহারের গোপালগঞ্জ থেকে কলকাতায় এসে প্রতিষ্ঠালাভ করতে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে মুকেশকে। মুকেশ গত মরশুমের রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার হয়ে ৫ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়েছেন। শাহবাজ আহমেদও সমসংখ্যক ম্যাচে সমসংখ্যক উইকেট পান। শাহবাজ জিম্বাবোয়ে সফরে গিয়েছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দরের পরিবর্ত হিসেবে। এবার মুকেশ প্রথমবার ডাক পেলেন ভারতের এ দলে। এই দলে বাংলার অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরনও রয়েছেন।
কঠিন পথ পেরিয়ে
মুকেশ বলেন, আমি প্রথম ডিভিশনের ক্লাব শিবপুর ইনস্টিটিউটে খেলার সুযোগ পাই। ক্লাবের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। আমাকে বাজার থেকে কেনা চিনাবাদাম দেওয়া হতো। কলকাতায় খরচ চালানোর জন্য খেপ খেলতেও বাধ্য হতাম। বাংলা দলের ট্রায়ালে গিয়েছিলাম। আমি লাইনে অনেকের পিছনে ছিলাম। আমার সামনে দাঁড়ানো একজনকে বলে ওয়াশরুমে যাই। গ্যালারির ওয়াশরুম থেকে এসে মিনিট দশেক পর দেখি সেখানে কেউ নেই। রণদেব বোস ও জয়দীপ মুখোপাধ্যায় দাঁড়িয়ে। তাঁদের বলি আমি ট্রায়ালে এসেছিলাম। তাঁরা তালিকা দেখে বলেন, আমার নাম ডাকা হয়েছিল। কয়েকবার সাড়া না পেয়ে নামের পাশে কাটা চিহ্ন বসে গিয়েছে। কাকুতি-মিনতি করার পর রণদেব একটি এসজি টেস্ট বল দিয়ে মুকেশকে বল করতে বলেন। মুকেশের কথায়, আমার ইনস্যুইঙ্গিং ইয়র্কারে ব্যাটার ভারসাম্য রাখতে পারেনি। এরপর রণদেব স্যর জয়দীপ স্যরের দিকে এগিয়ে যান। এরপরই কাটা চিহ্ন বদলে গিয়ে মুকেশের জন্য বাংলার দরজা খুলে যায়।
সৌরভের সহায়তা
তিনবার সিআরপিএফের পরীক্ষা দিয়েছেন মুকেশ। কিন্তু শেষে ক্রিকেটকেই বেছে নেন। ছয় ভাইয়ের মধ্যে মুকেশই ছোট। পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভালো ছিল না। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তখন সিএবির শীর্ষপদে। রণদেবের কাছে মুকেশের কথা জানতে পেরে সৌরভ মুকেশকে ইডেনেই থাকার বন্দোবস্ত করে দেন, তাঁর ডায়েটের যাবতীয় ভার বহন শুরু করেন। বুচিবাবু টুর্নামেন্টে ভালো খেলার পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক। ২৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১০০ উইকেট রয়েছে। বাংলার সহকারী কোচ সৌরাশিস লাহিড়ীর কথায়, মুকেশের বিশেষত্ব হলো তাঁর উইকেটগুলির বেশিরভাগই টপ অর্ডারের। নতুন বলের পাশাপাশি দারুণ কার্যকরী পুরানো বল হাতেও।
ভারতের এ দল
নিউজিল্যান্ড এ দল ভারত সফরে এসে তিনটি করে ৪ দিনের ও এক দিনের ম্যাচ খেলবে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম ম্যাচ বেঙ্গালুরুতে। ৮ ও ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে বাকি ম্যাচ যথাক্রমে হুবলি ও বেঙ্গালুরুতে। ২২, ২৫ ও ২৭ সেপ্টেম্বর তিনটি ওয়ান ডে ম্যাচ চেন্নাইয়ে। চার দিনের ম্যাচগুলির জন্য ঘোষিত ভারতীয় এ দল- প্রিয়াঙ্ক পাঞ্চাল (অধিনায়ক), অভিমন্যু ঈশ্বরন, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়, রজত পাটীদার, সরফরাজ খান, তিলক বর্মা, কেএস ভরত (উইকেটকিপার), উপেন্দ্র যাদব (উইকেটকিপার), কুলদীপ যাদব, সৌরভ কুমার, রাহুল চাহার, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, উমরান মালিক, মুকেশ কুমার, যশ দয়াল, অর্জন নাগওয়াসওয়ালা।