বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ায় গুজরাট সরকার এবং কেন্দ্রকে নোটিস ধরাল সুপ্রিম কোর্ট। টিএমসি এবং বামেরা এক সঙ্গে এর প্রতিবাদে মামলা দায়ের করেছিল সুপ্রিম কোর্টে। তাতে সামিল হয়েছে নারী সুরক্ষা মঞ্চ। এক সঙ্গে তাঁরা গুজরাট সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। তারপরেই সুপ্রিম কোর্ট মামলার শুনািনতে গুজরাট সরকার এবং কেন্দ্রকে এক যোগে নােটিস পাঠিয়েছে।
স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন গুজরাত সরকার মুক্তি দেয় বিলকিস বানো গণধর্ষণ কাণ্ডে যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত এগারো জনকে। শীর্ষ আদালতে সাজা কমানোর আর্জি জানিয়েছিল এক আসামি। তারপরে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাট সরকারকে কমিটি গড়ে বিষয়টি পর্যালোচনা করতে বলেছিল। তার পরেই সেই কমিটির অনুমোদন িনয়ে হঠাৎ করেই চোদ্দই অগাস্ট অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন মুক্তি দেওয়া হয় এগারো জন যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামিকে।
খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রয়েছে যাদের উপর তাঁদের কীভাবে সাজা মাফ করা হল তানিয়ে সরব হয় একাধিক স্বেচ্ছাসেবী এবং মানবাধিকার সংস্থা। বিলকিস বানো নিজে গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জািনয়ে সরব হয়েছেন। তিনি দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন আর নিজেকে িনরাপদ মনে করছেন না তিনি। যে নারকীয় অত্যাচার তাঁর উপরে হয়েছিল সেকথা ফের মনে পড়ছে তাঁর। নতুন করে তীব্র মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে তাঁকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গোধরা কাণ্ডের পর গুজরাতে যে দাঙ্গা ছড়িয়েছিল সেসময় গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বিলকিস বানো। দাঙ্গা থেকে বাঁচতে পরিবারের সঙ্গে অন্য জায়গায় পালাচ্ছিলেন তিিন। সেসময় তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। সেসময় ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বিলকিস বানো। তাঁর ৩ বছরের শিশুকন্যাকে চোখের সামনে হত্যা করেছিল ধর্ষকরা। এমনকী পরিবারের দশ জনকে নারকীয় ভাবে খুন করা হয়েছিল। তার দীর্ঘ এক বছর পর এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে মামলা শুরু হয়। পুলিশ সেসময় কোনো পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।
সেই যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত এগারো জনকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাত সরকার। সিপিএমের পলিট ব্যুরোর সদস্য সুভষিণী আলি এবং টিএমসি সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং মহিলা অধিকার রক্ষার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আদালতে গুজরাট সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই গুজরাট সরকার এবং মোদী সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজনৈতিক মহলের দাবি গুজরাট বিধানসভা ভোটের কারণে বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পুরোটাই ভোট ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।