বিহারে আস্থা ভোটের আগে বিধানসভার স্পিকার বিজয়কুমার সিনহা পদত্যাগ করলেন। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সরকার তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। এরপর অধ্যক্ষ অনাস্থা প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এই প্রস্তাব অস্পষ্ট এবং নিয়ম অনুযায়ী হয়নি। তবে আস্থা ভোটের আগেই তিনি সরে দাঁড়ালেন।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে বিহার বিধানসভার স্পিকার বিজকুমার সিনহা বুধবার নীতীশ কুমারের মহাজোট সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছে নতি স্বীকার করেই আস্থা ভোটের আগে সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বিধানসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন. নরেন্দ্র নায়ারণন যাদব চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অ্যাজেন্ডায় সভাপতিত্ব করবেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিহার বিধানসভার সচিবালয় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের পরামর্শে বিধানসভার স্পিকার বিজয়কুমার সিনহার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। এর আগে বিজয়কুমার সিনহা পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেন। এদিন স্পিকার পদত্যাগ করার পর বিধানসভা দুপুর দুটো পর্যন্ত মুলতুবি করার কথা ঘোষণা করেন। মন্ত্রী বিজয়কুমার চৌধুরী এ বিষয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। পরিষদীয় মবন্ত্রী আপত্তি জানিয়ে বলেন, এর ফলে ফ্লোর টেস্ট অযথা বিলম্বিত হবে। আর বিলম্ব ঘটানোর জন্যই তিনি বিধানসভা মুলতুবি করে গেলেন।
বিহারের স্পিকার পদত্যাগের আগে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ম অনুযায়ী আনা হয়নি। যে ন-জন তাঁর বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছিলেন, তার মধ্যে আটটি নিয়ম মেনে ছিল না। যদিও নিয়ম অনুযায়ী প্রস্তাব আনা না হলেও তিনি পদত্যাগ করেন। তার আগে সিপিআইএমএলের পক্ষ থেকে স্পিকারের পদত্যাগ দাবি করে বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ দেখান। বুধবার সকালে সিপিআইএমএল বিধায়করা বিহার বিধানসভার বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান।
এদিন বিজেপি নেতারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ শামিল হন। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- হিন্দু দেবদেবীর অসম্মান আমরা সহ্য করব না। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার গয়ার একটি মন্দিরে গিয়ে রা্জযের মন্ত্রী ইজরায়েল মনসুরির সঙ্গে অ-হিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তাতে হিন্দু ধর্মের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে বলে অভিযোগ বিজেপির। তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে নীতীশ কুমারকে ক্ষমা চাইতে হবে।
উল্লেখ্য, বিহারের স্পিকারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল বারবার। তার জেরে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ইস্তফা দেন। ভেঙে যায় বিজেপির সঙ্গে তাঁর দলের জোট। এর পরক্ষণেই তিনি মহাজোটে ভিড়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী কুর্সি দখল করে নেন। সেই নতুন সরকারের এদিনই আস্থা ভোট রয়েছে। তার আগে পদত্যাগ করলেন স্পিকার।