এআইএফএফের নির্বাচন হওয়ার কথা ২৮ অগাস্ট। ফিফা নির্বাসন জারির পর ভারতীয় ফুটবল কোন দিকে এগোচ্ছে তা আরও স্পষ্ট হবে আগামীকার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পর। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রক ফিফার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। কী করলে ব্যান উঠবে তা জানিয়েও দিয়েছে ফিফা। এর মধ্যেই এআইএফএফ-এ নতুন কমিটি তৈরির জন্য নির্বাচনের দিকেই সকলে তাকিয়ে রয়েছেন।
দ্য প্রিন্ট (The Print)-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, প্রাক্তন ফুটবলারদের চেয়ে রাজনীতিবিদরাই ফেডারেশনের পদাধিকারী হওয়ার দৌড়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছেন। এআইএফএফ সভাপতি হওয়ার জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সাতজন। তার মধ্যে ভারতের প্রাক্তন গোলরক্ষক তথা বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের পাল্লা ভারী বলেই জানা যাচ্ছে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ভাইচুং ভুটিয়াও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ফেডারেশনের সভাপতি হওয়ার দৌড়ে থাকা এই দুজনই পেশাদার ফুটবল খেলেছেন। বাকিরা হলেন কংগ্রেস নেতা তথা রাজস্থান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানবেন্দ্র সিং (প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিংয়ের পুত্র), ফুটবল বিশেষজ্ঞ তথা দিল্লি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাজি প্রভাকরণ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দাদা তথা আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্য়ায়, কর্নাটকের কংগ্রেস বিধায়ক এন এ হ্যারিস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে গোয়া নির্বাচনে লড়াই করা ভালাঙ্কা নাতাশা আলেমাও। সভাপতির দৌড়ে থাকা একমাত্র মহিলা
কার্যকরী কমিটির সদস্য হওয়ার লড়াইয়ে রয়েছেন ভারতের প্রাক্তন মিডফিল্ডার ইউজেনসন লিংডো। বছর ছত্রিশের লিংডো মেঘালয় বিধানসভায় মফলাং কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিধায়ক। উল্লেখ্য, গত মে মাস অবধি দীর্ঘদিন ফেডারেশনের সভাপতি পদ আঁকড়ে ছিলেন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির সাংসদ প্রফুল প্যাটেল। তাঁকে সরিয়ে দিয়ে তিন সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীর হাতে এআইএফএফ পরিচালনা, নতুন সংবিধান চূড়ান্ত করা ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন কমিটি গড়ার ভার তুলে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। যদিও এই প্রশাসকমণ্ডলীকে ফেডারেশন পরিচালনার ভার দেওয়ায় তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতির কারণ দেখিয়ে ভারতকে নির্বাসিত করেছে ফিফা।
প্রফুল প্যাটেল ২০০৯ সালে ফেডারেশন সভাপতি হন। এরপর পুনর্নির্বাচিত হন ২০১২ ও ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালের মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় আদালতের দোহাই দিয়ে ২০২০ সালে মেয়াদ শেষের পরও তিনি এআইএফএফ সভাপতি পদে আসীন ছিলেন। ফেডারেশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রশাসকমণ্ডলীর ভূমিকায় অসন্তুষ্ট ফিফা ১৫ অগাস্ট ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই নির্বাসন না উঠলে ১১ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠেয় অনূর্ধ্ব ১৭ মহিলা বিশ্বকাপ ভারতে হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে ফিফা। গত সপ্তাহেই এই ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ করে নির্বাসন তোলার ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ। কেন্দ্র সোমবার অবধি সময় চেয়ে নেয় পরিস্থিতির বিষয়ে শীর্ষ আদালতকে অবহিত করার জন্য। ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসিত করতে ফিফা ও এএফসিকে প্রফুল প্যাটেল বিভ্রান্ত করেছেন বলে অভিযোগ সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত তিন সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীর।