ভয়াবহ হড়পা বান আর মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হিমাচল প্রদেশে। গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই দুর্যোগে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২২ জনের, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন একই পরিবারের ৮ জন। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলেও খবর। শনিবার হিমাচলের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডিরেক্টর সুদেশ কুমার মোখতা এই তথ্য জানিয়েছেন।
সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিমাচলের মান্ডি, কাংগরা, চাম্বা জেলা। ট্রাফিকের পরিস্থিতিও অত্যন্ত খারাপ। রাজ্যের একাধিক রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে খারাপ আবহাওয়ার কারণে। অন্তত ৭৪৩ টি রোডে একই অবস্থা, যার মধ্যে রয়েছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মান্ডি-চণ্ডীগড় জাতীয় সড়ক।
শুধুমাত্র মান্ডিতেই ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। হড়পা বানে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ৫ জন। প্রবল বৃষ্টির জেরেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ডেপুটি কমিশনার অরিন্দম চৌধুরী জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিনত হয়েছে একাধিক জায়গা। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ধ্বংসস্তূপের ২২ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের দেহ পরিবারের হাতে তুলে ধরা হয়েছে।
ভয়ঙ্কর ছবি দেখা গিয়েছে হিমাচলের ধরমশালায়। প্রবল বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছে রেল ব্রিজও। চাক্কি নদীর ওপর তৈরি হওয়া ওই সেতু পঞ্জাবের সীমান্তের একেবারেই কাছেই রয়েছে। ৮০০ মিটার দীর্ঘ ওই ন্যারো গজ লাইন তৈরি হয়েছে ব্রিটিশ আমলে। মনে করা হচ্ছে প্রবল জলের তোড়ে পিলারগুলি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় মানুষজন ওই রেলপথে ট্রেনে যাতায়াত করেন। এই ঘটনায় তাই ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হবে রাজ্যে রেল পরিষেবা।
এ ছাড়া, উত্তর প্রদেশ থেকে আসা একটি পর্যটকদের গাড়ির ওপর বোল্ডার ভেঙে পড়েছে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। শনিবার বিকেলের পর ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে মৌসম ভবনের তরফে। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর। দ্রুত উদ্ধার কাজ চালানোর ও ত্রান সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
একই পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে উত্তরাখণ্ডেও। শনিবার ভোরে আবারও মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কবলে পড়েছে দেবভূমি। রাজ্যের একাধিক জায়গায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে নদী, ভেসে গিয়েছে সেতু। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে উত্তরাখণ্ডে, নিখোঁজ ১০ জন। বহু মানুষ বাড়ি ভেঙে চাপা পড়ে যান। তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।