বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের মুক্তির দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ, আবেদনে স্বাক্ষর সমাজের বিশিষ্ট কর্মীর

বিলকিল বানো মামলায় দোষীদের মুক্তির ঘটনায় বিতর্ক ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছে। গুজরাত সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মানবাধিকার কর্মী, ইতিহাসবিদ, সরকারি আমলা সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা দোষীদের মুক্তি প্রত্যাহারের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনে ছয় হাজারের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছে। তারমধ্যে সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি মানবাধিকার কর্মী, বিশিষ্ট লেখক, ইতিহাসবিদ, প্রাক্তন আমলারা রয়েছেন। একধিক মহিলা সংগঠনের সদস্যরা আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন।

সুপ্রিম কোর্টে আবেদনে কী জানানো হয়েছে

সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনে জানানো হয়েছে, 'আমাদের লজ্জা হয়। ঠিক যে সময় দেশের স্বাধীনতা নিয়ে গর্ব করা উচিত, দেশে মহিলাদের অগ্রগতি নিয়ে গর্ব করা উচিত, সেই সময় গণধর্ষণ ও গণহত্যাকারীরা মুক্তি পেয়েছে।' আবেদনে জানানো হয়েছে, 'সাজাগুলো মুকুব করা শুধু অনৈতিক বা অসংবেদনশীল নয়, এটি গুজরাতের নিজস্ব ক্ষমানীতি ও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলোকে যে নির্দেশিকা জার করে, তার লঙ্ঘন হয়েছে। দোষীদের স্বাধীনতা দিবসের দিন মুক্তি দেওয়া হয়, তা দেশের জন্য অপমানের বলেও উল্লেখ করা হয়।'

বিলকিস বানো মামলায় মুক্ত অপরাধীরা

২০০২ সালে গোধরা পরবর্তী বিলকিস বানো মামলায় ১১ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল। আসামিদের চলতি বছর স্বাধীনতা দিবেসর দিন মুক্তি দেওয়া হয়। ২১ জানুয়ারি ২০০৮ সালে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত বিলকিল বানোর পরিবারের সাতজনকে গণধর্ষণ ও হত্যার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। পরে বোম্বে হাইকোর্ট তাদের দোষী সাব্যস্ত করে। আসামি ১১ জন ১৫ বছরের বেশি জেলে ছিল। আসামিদের একজন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন জামিনের। গোধরা জেলার কালেক্টর সুজয় মায়াত্র জানিয়েছেন, আসামিদের সাজা মুকুবের জন্য গুজরাত সরকারকে সুপ্রিম কোর্ট একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। কয়েক মাস আগে কমিটি ক্ষমার সুপারিশ গুজরাত সরকারকে পাঠায়। এরপরেই আসামিদের মুক্তির আদেশ গুজরাত সরকার দেয় বলে জানা গিয়েছে।

কী হয়েছিল বিলকিস বানো ও তাঁর পরিবাবের সঙ্গে

ঘটনার সময় বিলকিস বানো মাত্র ২০ বছরের ছিলেন। তিনি সেই সময় কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তিনি নৃশংস গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। পরিচিতরা যাঁদের তিনি ছোটবেলা থেকে চিনতেন তাঁরাই বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করে। এছাড়া বিলকিস বানোর পরিবারের সাতজনকে গণধর্ষণ করে খুন করে। বিলকিস বানোর তিন বছরের মেয়েও অই নির্মম হত্যালীলা থেকে বাঁচতে পারেনি। বিলকিস বানুর সংজ্ঞাহীন দেহকে মৃত ভেবে আসামিরা চলে যায়। জ্ঞান ফেরার পর স্থানীয় আদিবাসি মহিলার কাছ থেকে কাপড় চেয়ে পরেন। তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে, মহিলা কনস্টেবল কেসটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ২০০৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত থেকে মামলাটি মুম্বইয়ে সরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তদের বাঁচানোর জন্য হেড কমস্টেবলের মিথ্যা রেকর্ড তৈরির জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। প্রমাণের অভাবে ২০ জন অভিযুক্তের মধ্যে সাত জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিচার চলাকালীন একজনের মৃত্যু হয়। ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত।

ভোট ব্যাঙ্ক দখলে নয়া কৌশল বিজেপির, তপশিলি জাতি-উপজাতিদের উন্নয়নে ৯৫০ কোটি টাকা দিল মোদী সরকারভোট ব্যাঙ্ক দখলে নয়া কৌশল বিজেপির, তপশিলি জাতি-উপজাতিদের উন্নয়নে ৯৫০ কোটি টাকা দিল মোদী সরকার

More ACTIVIST News  

Read more about:
English summary
Activist, historians among 6000 urge SC to revoke release of convitcs
Story first published: Friday, August 19, 2022, 13:28 [IST]