কেটে গিয়েছে আড়াই মাস, পর্যাপ্ত বর্ষা হয়নি
বাংলায় মৌসুমী বায়ু প্রবেশের পর ইতিমধ্যেই কেটে গিয়েছে আড়াই মাস। তবু পর্যাপ্ত বর্ষা দেখা যায়নি। বৃষ্টির অভাব প্রকট হয়েছে রাজ্যজুড়ে। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি তীব্রতর হয়েছে। এই অবস্থায় খরা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বাংলায়। আবহবিজ্ঞানীরা বলেছেন, শুধু বাংলাই নয়, দেশের সাতটি রাজ্যে খরার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভাদ্রমাসের শুরুতেই নিম্নচাপ কি ঘাটতি কতটা মেটাবে
দেশের সাতটি রাজ্য পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি থেকে বঞ্চিত রয়েছে। বৃষ্টির অভাবে সেই সব রাজ্যের কৃষিকাজে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে ধান উৎপাদনে সমস্যা তীব্রতর হয়েছে এবার। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ধানের উৎপাদনে প্রভাব ফেলেছে বৃষ্টির ঘাটতি। তবে শ্রাবণ মাসের শেষলগ্নে এবং ভাদ্রমাসের শুরুতে জোড়া নিম্নচাপ সেই ঘাটতি কতটা মেটাতে পারে, তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে বঙ্গবাসী।
রাজ্যের কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন বৃষ্টির ঘাটতিতে
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া ভারতের যে সব রাজ্যে বেশি ধান উৎপাদন হয়, সেইসব রাজ্যে অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উত্তর-পূর্ব ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। বৃষ্টির অভাবে বহু জায়গায় কৃষকরা ধান উৎপাদন করতে পারেননি। আসলে এবার শ্রাবণ মাস পর্যন্ত অর্থাৎ ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে খুব কম।
পশ্চিমবঙ্গে ৩০ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে এবার
এবার সবথেকে বৃষ্টির কম হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। এ রাজ্যে স্বাভাবিকের থেকে ৪৪ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে এবার। আর পশ্চিমবঙ্গে ৩০ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। বিহার ও ঝাড়খণ্ডেও পশ্চিমবঙ্গের মতো কম বৃষ্টি হয়েছে। তবে সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের জেরে যে দুর্যোগ চলছে, তা কতটা বৃষ্টির ঘাটতি মেটাতে পারে, তার উপর অনেকটাই নির্ভর করবে বঙ্গের খরা সম্ভাবনা।
খরার সম্ভাবনার মধ্যেই শরতের শুরুতে বৃষ্টি শুরু
রাষ্ট্রপুঞ্জ মনে করছে, প্রতি বছরই খরাপ্রবণ এলাকা বাড়ছে। ১৯৯৭ সালে দেশে যে পরিমাণ খরাপ্রবণ এলাকা ছিল, এখন তা বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। এমনকী ২০২০ সালের থেকে ২০২২ সালে খরাপ্রবণ এলাকা দুই-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। আর গোটা বিশ্বে ২০৫০ সালে ৭৫ শতাংশ মানুষ খরার প্রকোপে পড়বেন। এই খরার সম্ভাবনার মধ্যেই শরতের শুরুতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে বঙ্গে, এটাই যা স্বস্তির।
সাগরে গভীর নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু, দোসর ঝড়
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় অতিভারী বৃষ্টি চলছে। দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইছে। শুক্র ও শনিবার দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকা ছাড়াও কলকাতা-সহ শহরতলির জেলাগুলিতে এবং পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেও মুষলধারে বৃষ্টি হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে অতিভারী বৃষ্টি হবে। ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে উপকূলবর্তী অঞ্চলে। সংলগ্ন অন্যান্য জেলায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো বাতাস বইবে।