শ্রীলঙ্কার বন্দরে চিনা জাহাজ নিয়ে বাড়ছে উত্তেজনা, তৃতীয় পক্ষকে সতর্ক বেজিংয়ের

মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে চিনা জাহাজ ইউয়ান ওয়াং ৫ প্রবেশ করেছে। চিনা জাহাজের শ্রীলঙ্কার বন্দরে প্রবেশ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারত ও আমেরিকা। চিনের তরফে বার বার জানানো হয়েছে, গবেষণার কাজে এই জাহাজ ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে, আমেরিকা ও ভারত অভিযোগ করেছে, চিন গুপ্তচর বৃত্তির জন্য এই জাহাজ ব্যবহার করছে। এই পরিস্থিতি নাম না করে ভারত ও আমেরিকাকে সতর্ক করল চিন। বেজিং জানিয়েছে, গবেষণার জাহাজটি নিয়ে 'তৃতীয় পক্ষের' নাক গলানোর কোনও প্রয়োজন নেই।

‘তৃতীয় পক্ষের’ নাক গলানোর প্রয়োজন নেই

চিনের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চিনের গবেষণার কাজে ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজটি ব্যবহার করা হচ্ছে। মূলত মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহার কর হয়েছে। জ্বালানি ভরতে ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজটি শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে পৌঁছেছে। জাহাজটিকে স্বাগত জানাতে চিনের রাষ্ট্রদূত তিউ জেনহং, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি ও প্রশাসনের বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। বন্দরে পৌঁছনোর পর জ্বালানি ভরতে, খাদ্যসামগ্রী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করতে জাহাজটির বেশ কিছুটা সময় লাগবে। এরপরেই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের তরফে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চিন এই গবেষণার কাজটি করছে। এখানে তৃতীয় পক্ষের নাক গলানোর কোনও প্রয়োজন নেই।

ভারতের উদ্বেগের কারণ

ভারত শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজের প্রবেশের তীব্র বিরোধিতা করেছিল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাকাশ গবেষণার নামে জাহাজগুলোতে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এতটাই উন্নত প্রযুক্তি যে হাম্বানোটোটা বন্দর থেকে ভারতের একাধিক সামরিক গতিবিধির ওপর নজর রাখতে পারবে জাহাজটি। যেমন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা ভারত করলে, তাকে শুধু ট্র্যাক করতে পারবে না চিনা জাহাজটি, পাশাপাশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কতটা শক্তিশালী সেই বিষয়েও ধারণা করতে পারবে। ভারতের পরমাণু কেন্দ্রগুলোর ওপরও চিন এই জাহাজের সাহায্যে নজর রাখতে পারবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

চাপের মুখে শ্রীলঙ্কা

প্রাথমিকভাবে চিনের এই জাহাজটিকে হাম্বানটোটা বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেয় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ভারত এর তীব্র বিরোধিতা করলে, শ্রীলঙ্কা চিনকে ইউয়ান ওয়াং ৫ -এর হাম্বানটোটা বন্দরে প্রবেশ স্থগিত করার আবেদন করে। এরপরেই চিনা হুমকির মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা। চিনা রাষ্ট্রদূত শ্রীলঙ্কার প্রশাসনকে কার্যত হুমকির সুরে বলে এর ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হবে। বর্তমানে তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। একদিকে যেমন সঙ্কটের সময় ভারত শ্রীলঙ্কাকে সব থেকে বেশি সাহায্য করছে। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার চিনের কাছে অনেক ঋণ রয়েছে। যা শোধ করার ক্ষমতা বর্তমানে শ্রীলঙ্কার নেই। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার ভারত ও চিন উভয় দেশের সাহায্যের প্রয়োজন। চাপের মুখে পড়ে যে শ্রীলঙ্কা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

চিনা গুপ্তচর জাহাজে রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তি, শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকে ভারত মহাসাগরে চালাতে পারে সমীক্ষা চিনা গুপ্তচর জাহাজে রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তি, শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকে ভারত মহাসাগরে চালাতে পারে সমীক্ষা

More CHINA News  

Read more about:
English summary
China warns third parties as vessel dock in Sri Lanka port
Story first published: Tuesday, August 16, 2022, 19:32 [IST]