সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ক্ষমতাচ্যুতি ঘটে প্রফুল প্যাটেলের:
১৮ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ক্ষমতা হারান মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ)-এর সভাপতির পদ দখল করে বসে থাকা প্রফুল প্যাটেল এবং একই সঙ্গে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মেয়াদ উত্তীর্ণ এক্সিকিউটিভ কমিটিকেও। তিন সদস্যের কমিটি অব অ্যাডমিনিট্রেটার্স (সিওএ) নিযুক্ত করে সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটিতে রয়েছে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এআর ডাভে এবং ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়।
ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসিত না করার অনুরোধ প্রফুলের:
ভারতীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সিওএ-এর হাতে চলে যাওয়ায় ফিফার প্রধান জিয়ানি ইন্ফান্তিনোকে অনুরোধ করেন প্রফুল প্যাটেল যাতে ভারতকে নির্বাসিত না করে ফিফা। এটি ২৩ মে-এর ঘটনা। ২৯ মে সিওএ-এর সদস্য কুরেশি জানান সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন এক্সিকিউটিভ কমিটি গঠন হবে, তারা নিজেদের দায়িত্ব গ্রহণ করবে এবং ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে সপ্রিম কোর্টে জমা করা হবে পরিমার্জিত সংবিধান।
১১ জুন সিওএ-এর সদস্যরা এবং রাজ্য সংস্থাগুলির প্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসে ন্যাশনাল স্পোর্টস কোড, এএফসি এবং ফিফার নিয়মকে মান্যতা দিয়ে নতুন সংবিধান অনুযায়ী কী ভাবে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকা নির্বাচন দ্রুত সমপন্ন করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করার জন্য।
ভারতে আসে ফিফা-এফসি'র প্রতিনিধি দল এবং নির্দিষ্ট সময় বেধে দেয় ডামাডোল মেটানোর:
ভারতীয় ফুটবলের পরিস্থিতি খাতিয়ে দেখতে ভারতে আসে ফিফা এবং এএফসি'র যৌথ প্রতিনিধি দল। ২১ জুন ভাল মতোই আলোচনা সমপন্ন হয় ফিফা-এফসি'র প্রতিনিধিদের সঙ্গে সিওএ-এর তিন সদস্যের। ২২ জুন এআইএফএফ-এর রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা ফিফা-এএফসি'র প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে এবং জানায় বাধ্য হয়েই সুপ্রিম কোর্টকে মাথা গলাতে হয়েছে এই বিষয়ে। ২৩ জুন ভারত ছেড়ে যাওয়ার আগে ফিফা ডেড লাইন বেঁধে দেয় ভারতীয় ফুটবলের এই ডামাডোল মেটানোর জন্য। সংবিধান ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয় এবং ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়।
সংবিধানের ড্রাফট ফিফাতে পাঠায় এআইএফএফ:
১৩ জুলাই ফিফাতে নতুন সংবিধানের ফাইনাল ড্রাফট পাঠায় এআইএফএফ। ১৬ জুলাই সিওএ এআইএফএফ-এর ড্রাফট কন্সটিটিউশন জমা দেয় সুপ্রিম কোর্টে অনুমোনের জন্য। ১৮ জুলাই এআইএফএফ-অধীনে রাজ্য ফুটবল সংস্থাগুলি ড্রাফ্টের একাধিক বিষয় নিয়ে অমত পোষন করে। ২১ জুলাই এআইএফএফ-এর নির্বাচন ত্বরান্বিত করার বিষয়ে জোর দেয় এআইএফএফ। ২৬ জুলাই ফিফার তরফ থেকে এআইএফএফ-কে জানানো হয়, এক্সিকিউটিভ কমিটিতে ২৫ শতাংশ ফুটবলারকে রাখতে হবে।
এআইএফএফ-কে নির্বাসন করার হুমকি দেয় ফিফা:
অগস্টের ৬ তারিখ এআইএফএফ-কে নির্বাসিত করার হুমকি দেয় ফিফা এবং এ-ও জানানো হয় তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের জন্য অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজনের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হবে। ৭ অগস্ট ফিফাকে সিওএ আশ্বস্থ করে যে এআইএফএফ-কে সাধারণ অবস্থায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চালু রয়েছে এবং শীঘ্রই সমস্যা মিটবে। ১৩ অগস্ট এআইএফএফ নির্বাচনে ভোট দানের ক্ষমতা দেয় ৩৫ জন প্রখ্যাত ফুটবলারকে, যেই তালিকায় রয়েছেন আইএম বিজয়ন এবং বাইচুং ভুটিয়া। ২৮ অগস্ট এই ভোট হওয়ার কথা।
এআইএফএফ-কে নির্বাসিত করে ফিফা:
১৬ অগস্ট রাত ২:১০ মিনিটে প্রেস রিলিজ পাঠায় ফিফা যাতে উল্লেখ করা হয় তৃতীয় পক্ষের অন্তর্ভুক্তির জন্য সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে নির্বাসিত করল ফিফা। এআইএফএফ-এর নতুন এক্সিকিউটিভ কমিটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলে তবেই এই নিষেধাজ্ঞা তোলা হবে।