তৈরি হবে গাইড বুক
ফেব্রুয়ারিতে হওয়া ধর্মসংসদে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সাধু ও ধর্মীয় নেতারা একটি খসড়া তৈরি করবেন। যা হিন্দু রাষ্ট্র তৈরি করতে সংবিধানের আকারে গাইড বুক হিসেবে কাজ করবে। ইতিমধ্যেই ধর্মীয় পণ্ডিত এবং আইন বিশেষজ্ঞরা একটি দলিল তৈরি করেছেন। বলা হয়েছে , প্রস্তাবিত গাইড বুক হবে ৭৫০ পাতার। খসড়ায় কোনও বিষয় অন্তর্ভুক্তির আদে সাধারণ জনগণের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
কেন খসড়া
হিন্দু রাষ্ট্র সংবিধান কমিটির উদ্দেশ্য ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে হিসেবে পরিণত করতে জনগণের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করা জরুরি। প্রয়াদরাজের মাঘ মেলায় হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব পাশ করানোর পরে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, ভারতে হিন্দুদের অধিকার রক্ষার জন্য এবং একটি হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের জন্য গণভোটের এটাই উপযুক্ত সময়।
শাম্ভবী পীঠধীশ্বর স্বামী আনন্দ স্বরূপ বলেছেন, দেশের সংবিধান প্রণেতাদের মূল চেতনা ছিল ভারতে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করা। ৩০০ বারের বেশি সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। সেখানে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দ যোগ করা হয়েছে। দেশে যেহেতু ইসলামি সন্ত্রাস বাড়ছে এবং অনেক রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়ছে, তাই ভারতে হিন্দু রাষ্ট্র পরিণত করতে এটাই উপযুক্ত সময়।
বারাণসীকে রাজধানী করার প্রস্তাব
খসড়ায় দিল্লির পরিবর্তে বারাণসীকে ভারতের রাজধানী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যাঁরা খসড়া তৈরি করেছেন, তাঁদের মতে বারাণসী সর্বজ্ঞতার কেন্দ্র ছিল, তাই একে হিন্দু রাষ্ট্রের রাজধানী করা উচিত। তবে আনন্দ স্বরূপ বলেছেন, এই প্রস্তাব কেবল আলোচনার জন্য। উজ্জয়িনীর মতো অন্য কোনও জায়গাকে রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ভোটাধিকার থাকবে না মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের
খসড়ায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ভোটাধিকার। সেখানে বলা হয়েছে, মুসলিম এবং খ্রিস্টান ছাড়া অন্য সবার ভোটাধিকার থাকবে। মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের ভোটাধিকার ছাড়া অন্যসব অধিকার থাকবে। তারা শিক্ষা-চাকরি-ব্যবসা সব কিছুতেই অংশ গ্রহণ করতে পারবে। হিন্দুরা ভোটাধিকার পাবেন শিখ, বৌদ্ধ এবং জৈনরা।
এব্যাপারে আনন্দ স্বরূপের যুক্তি অন্য দেশে একই পরিস্থিতি। ইসলামী দেশগুলোতে বসবাসকারী হিন্দুদের কি ভোটাধিকার আছে, প্রশ্ন করেছেন তিনি।
ভোটদানের ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর
খসড়ায় বলা হয়েছে ভোটদানের ন্যূনতম বয়স বাড়িয়ে ২৫ বছর করা হোক। খসড়ায় শিক্ষা, প্রতিরক্ষা এবং আইনশৃঘ্খলার মতো বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। খসড়ায় কৃষিকে কর মুক্ত এবং গুরুকূলকে বাধ্যতামূলক করারপ্রস্তাব রয়েছে। বর্ণ ব্যবস্থাকে এর যোগ্যতা নির্ধারণ করে খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ব্রিটিশের সময়কার সব আইন বাতিল করার প্রস্তাবও খসড়ায় করা হয়েছে।
খসড়া তৈরিতে যুক্ত ৩০ জন
৩০ জন সদস্য এই খসড়া তৈরিতে যুক্ত। এর মধ্যে শাম্ভবী পীঠধীশ্বর স্বামী আনন্দ স্বরূপ ছাড়াও রয়েছেন, কামেশ্বর উপাধ্যায়, সুপ্রিম কতোর্টের অ্যাডভোকেট বিএন রেড্ডি, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞা আনন্দ বর্ধন, বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের সভাপতি অজয় সিং, সনাতন ধর্ম বিশেষজ্ঞ চন্দ্রমণি মিশ্র। খসড়ার কভার পেজে অখণ্ড ভারতের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
খসড়া অনুমোদনের ব্যাপারে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আনন্দ স্বরূপ বলেছেন, পুরো বিষয়টিকে তারা জনগণের মধ্যে নিয়ে যাবেন। এর জন্য সনাতন ধর্মের সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
সারা দেশে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে জনগণের মতামত জেনে সরকারের কাছে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।