মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়ায় পাল্টে যায় রুশদির জীবন
ইরানের ধর্মীয় নেতা খামেনি ফতোয়ায় বিশ্বের মুসলমানদের দ্রুত বিতর্কিত বইটির লেখক ও প্রকাশকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আহ্বান জানান। তিনি জানিয়েছেন, রুশদির মৃত্যু নিশ্চিত করতে প্রাণ গেলে, তাঁকে শহিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এই ফতোয়ার পরেই সলমন রুশদির জীবন একেবারে পাল্টে যায়। ফতোয়ার জেরে ছদ্মনাম নিয়ে তিনি আত্মগোপন করেন। তিনি সেফ হাউসে চলে যান। প্রথম ছয় মাসে তিনি ৫৬ বার নিজের জায়গা পরিবর্তন করেন। ফতোয়া জারির ৩৪ বছর পরেও তিনি আত্মগোপন করে ছিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ লেখক সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে আবার হত্যার হুমকি আসছে। তিনি নিরাপত্তা বাড়ানোর আবেদন করেছিলেন।
ফতোয়া কী
ইসলাম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতাদের নির্দেশকে ফতোয়া বলে উল্লেখ করা হয়। আয়াতুল্লা খোমেনি সলমন রুশদির বিতর্কিত বইয়ের জন্য তাঁর মৃত্যুদণ্ডের ফতেয়া জারি করেছিলেন। তবে ফতোয়া মানে শুধু মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ নয়। ইসলামের ধর্মীয় নেতাদের যে কোনও ধরনের নির্দেশ বা সিদ্ধান্তকে অনেক সময় ফতোয়া বলে চিহ্নিত করা হয়। যেমন ২০০৫ সালে আমেরিকা ও কানাডার মুসলিম পণ্ডিত ও ধর্মীয় নেতাদের একটি দল ফতোয়া জারি করেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদ হারাম। ইসলামে এর কোনও স্থান নেই। হিংসার সঙ্গে যুক্ত বা হিংসাকে মদত দেওয়া যে কোনও কাজ হারাম ও নিষিদ্ধ। ওই ফতোয়ায় বলা হয়েছিল, দেশের নাগরিকের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
ফতোয়া বাতিলের চেষ্টা
ইরান সরকার ব্রিটেনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছিল। ১৯৯৮ সালে ইরান ও ব্রিটেনের কূটনৈতিক সম্পর্কের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় সলমন রুশদির বিরুদ্ধে জারি করা এই ফতোয়া। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইরান সরকার এই ফতোয়া বাতিলের চেষ্টা করেছিল। যদিও ফতোয়া জারির প্রায় ১০ বছরের মাথায় ইরানের একটি সরকারি সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়, সলমন রুশদির বিরুদ্ধে জারি করা ফতোয়া অব্যাহত রয়েছে। যে হত্যা করতে পারবেন লেখককে, তাঁর পুরস্কারের মূল্য বেড়ে তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে।