ঠিক যেন সিনেমার গল্প। টানটান উত্তেজনার মধ্যে যখন ছদ্মবেশে অভিযান চালানো হয়। যেখানে ধরা পড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। একবার প্রতিপক্ষের কাছে ধরা পড়লেই সমস্ত পরিকল্পনা বানচাল। এমনকী বিপদে পড়ার প্রবল আশঙ্কা। এমন এক নাটকীয় অভিযান চালিয়ে আয়কর দফতর মহারাষ্ট্রের জানলা থেকে প্রায় ৩৯০ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার করেছে। দুই ব্যবসায়ীর মূলত বাড়ি, ফার্ম হাউস, অফিস, গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। নগদ ৫৬ কোটি টাকা গুনতেই আয়কর দফতরের আধিকারিকদের প্রায় ১৩ ঘণ্টা সময় লেগেছে।
২৫০ জনের আয়করের আধিকারিকদের দল বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে অভিযান চালান। আগাম সতর্কতা হিসেবে তাঁরা ছদ্মবেশ ধারণ করেন। জানা গিয়েছে, আয়কর বিভাগ ৩ অগস্ট এই অভিযান চালায়। অভিযানের জন্য তাঁরা ১২০টি গাড়ি ব্যবহার করেছিলেন। গাড়িগুলো আলাদা আলাদা ভাবে ছাড়া হয়, যাতে কারও সন্দেহ না হয়। গাড়িগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যে মনে হচ্ছে বিয়ে বাড়ির। সন্দেহের বাইরে থাকতে আয়কর বিভাগের একাধিক গাড়িতে লেখ ছিল, 'দুলহন হাম লে জায়েঙ্গে'। ২০০০ সালে জনপ্রিয় বলিউড সিনেমার নাম। পাত্রপক্ষের গাড়িতে এই ধরনের লেখা থাকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই অভিযানে আয়কর বিভাগের ২৫০ জন আধিকারিকদের সঙ্গে পুলিশের একটি দলও ছিল। সন্দেহের বাইরে থাকতে আয়কর দফতরের কয়েকজন আধিকারিক বিয়েবাড়ির মতো পোশাক পরেছিলেন। এভাবেই বিয়ের বাড়ির যাত্রীদের নিয়ে অভিযানে বের হয় আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা। তাঁর এক সঙ্গে একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। অভিযান শেষে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই ধরনের ছদ্মবেশ অভিযানে অনেকটাই সুবিধা করেছে। এর ফলে প্রতিপক্ষ সাবধান হওয়ার সুযোগ পায়নি। যার ফলে ব্যাপক অঙ্কের অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আয়কর দফতর সূত্রের খবর, স্টিল, বস্ত্র ও রিয়েল এস্টেটের দুই ব্যবসায়ীর অবৈধ সম্পত্তিকে নিশানা করে এই অভিযান চালানো হয়েছে। একসঙ্গে ওই ব্যবসায়ীদের বাড়ি, ফার্ম হাউস, অফিস, গোডাউন সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। এই তল্লাশি অভিযানে শুধু ৫৬ কোটি নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। এর সঙ্গে ৩২ কেজি সোনা, ১৪ কোটি টাকার হীরে উদ্ধা করা হয়েছে। বেশ কিছু সম্পত্তির নথির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির পরিমাপ করতে প্রায় ১৩ ঘণ্টা সময় লেগেছিল আয়কর দফতরের আধিকারিকদের।