টেমস নদী শুকিয়ে যাচ্ছে! জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে খরার আশঙ্কা এবার ইংল্যান্ডে

টেমস নদী আগের থেকে অনেক বেশি শুকিয়ে গিয়েছে। নদীর এই অবস্থায় আভাস দিচ্ছে ইংল্যান্ডে প্রবেশ করতে পারে নয়া দুর্যোগ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইংল্যান্ড খরার মুখ পড়তে পারে। টেমস নদীর এই অবস্থায় দুর্যোগ মোকাবিলায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার দরাকর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সবথেকে শুষ্ক কেটেছে জুলাই মাস, আশঙ্কা

বিটেনের হাওয়া অফিস বলছে, ২০২২-এর জুলাই মাস ছিল ইংল্যান্ডের ৮৫ বছরের ইতিহাসে সবথেকে শুষ্কতম। এবার গড় বৃষ্টিপাত ছিল ২৩.১ মিলিমিটার বা ০.৯ ইঞ্চি। এই সংখ্যা এ মাসের গড় বৃষ্টিপাতের মাত্র ৩৫ শতাংশ। ইংল্যান্ডের বেশ কিছু অংশে সবথেকে শুষ্ক কেটেছে এই জুলাই মাস। তা আশঙ্কার বার্তা দিচ্ছে ইংল্যান্ডে।

ঝরনা গ্রীষ্মকালে শুকিয়ে যায়

টেমস নদীটি দক্ষিণ ইংল্যান্ডজুড়ে ২১৫ মাইল বা ৩৫৬ কিলোমিটার প্রসারিত। পস্চিমে গ্লুচেস্টারশায়ার থোকে লন্ডনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে পূর্বে এসেক্সে সমুদ্রে প্রবেশ করেছে এই টেমস নদী। এখন দেখা যাচ্ছে টেমল নদীর উৎসস্থলে যে ঝরনা রয়েছে, যার জলে পুষ্ট হয় টেমস, সেই ঝরনা গ্রীষ্মকালে শুকিয়ে যায়। কিন্তু এই নদীর তলাটি আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে আর নীচের দিকে পৌঁছেছে বলে নদী সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞরা তাঁদের পর্যবেক্ষণে মনে করছেন।

টেমসের তলার শুখা মাটি দেখা যাচ্ছে

রিভার্স ট্রাস্টের এক অফিসার টেমস নদীর একটি ছোট অংশে দাঁড়িয়ে বলেন, টেমসের উৎসস্থলে একটি চমৎকার পাব রয়েছে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার পিছনের দিকে রয়েছে তা। লন্ডন থেকে ৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে ক্রিকলেডে তার অবস্থান। এখানে টেমস খুব অগভীর। তবে এখান থেকে সমান্য একটু উপরের টিকে গেলেই দেখবেন টেমস শুষ্ক হয়ে গিয়েছে। টেমসের তলার শুখা মাটি দেখা যাচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনে অগভীর টেমস

তিনি আরও বলেন, এই অগভীর জলের উষ্ণতা স্বভাবতই বেশি। এখানে মাছ থাকে। অন্যান্য বন্যপ্রাণীর সহায়ক এই অঞ্চল। টেমস নদী গ্লুচেস্টারশায়ারে নদীর উৎস চিহ্নিত। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই তা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। টেমস হেড ইনটি উজানে একটি পাথর নদীর উৎস চিহ্নিত করে। পাথরটি সর্বটা সখানেই থাকবে। এখন সেখানে জল আসে কি না, সেটা পরের কথা।

বেনজির তাপ ও বৃষ্টিপাতের অভাব প্রকট

এবার বেনজির তাপ ও বৃষ্টিপাতের অভাব প্রকট হয়েছে ইংল্যান্ডে। তার ফলে দক্ষিণে দুটি জল সরবরাহ কোম্পানিকে হোসপাইপ ও স্প্রিংকলার সিস্টেমের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, টেমস ওয়াটার লন্ডন ও দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডজুড়ে ১৫ মিলিয়ন গ্রাহকদের সরবরাহ করা হয়। এরই মধ্যে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের কিছু অংশে চার দিন তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এবছরই ইংল্যান্ডের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছিল।

পরের গ্রীষ্মে জলভাণ্ডার অবশিষ্ট থাকবে তো!

ইউনিভার্সিটি অফ রিডিং-এর জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং জলবিদ হান্না ক্লাক বলেছেন, কম বৃষ্টিপাতের ফলে নদীর জলস্তর এবং জলাধারগুলির জলস্তর নীচে নেমে গিয়েছে। ফসলের সেচের জন্য বা শিল্পে নদীর জল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অগাস্টে যদি বৃষ্টি না হয়, শীতকাল ও বসন্তকাল ও পরের গ্রীষ্মে আমাদের কোনও জলভাণ্ডার অবশিষ্ট থাকবে না।

More RIVER News  

Read more about:
English summary
Tames river is driest due to Climate change as England is in threat situation for drought.