ভারতের থেকে বিদেশের সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেশী কথা বলেন। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে এভাবেই কটাক্ষ করলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। একটি অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জহরলাল নেহরুর সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে থারুর এই মন্তব্য করেন।
একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর আদর্শের তুলনা করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় সংসদের থেকে বিদেশী সংসদে বেশি বক্তব্য রেখেছেন। যা ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জহরলাল নেহরুর একদমই বিপরীত।' দুই প্রধানমন্ত্রীর তুলনা করতে গিয়ে তিনি চিনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা টেনে আনেন। তিনি বলেন, '১৯৬২ সালে চিনের সঙ্গে ভারত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সেই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জহরলাল নেহরু সংসদে অধিবেশন ডাকেন। সকলের সঙ্গে আলোচনা করেন। বর্তমানে চিন ও ভারত সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। গালোওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনাদের মধ্যে দুই বছর আগে সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় ২০ জন ভারতীয় সেনা শহিদ হয়েছিলেন। গালোওয়ান উপত্যকায় কী হয়েছিল, সেই নিয়ে আলোচনা করার অধিকার আমাদের নেই।' তিনি বলেন, 'সেনারা শহিদ হয়েছেন, তারপরেও লোকসভা ও রাজ্যসভায় এই বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।'
সোমবার সংসদে বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার পরের দিনই শশী থারুক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই মন্তব্য করেন। নির্ধারিত সময়ের চার দিন আগেই বাদল অধিবেশন শেষ হয়। বাদল অধিবেশনে বিরোধীরা একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছে। খাদ্যপণ্যের ওপর জিএসটি, মুদ্রা স্ফীতি, টাকার দামের পতন ইস্যুতে সরব হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদরা। অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীকে ইডির ন্যাশনাল হেরাল্ড দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ নিয়েও সরব হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদরা। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্র রাজনৈতি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর 'রাষ্ট্রপত্নী' মন্তব্যে সংসদ উত্তাল হয়ে ওঠে। অধীর রঞ্জন চৌধুরী রাষ্ট্রপতিকে 'রাষ্ট্রপত্নী' বলে উল্লেখ করেন। যদিও পরে ক্ষমা চেয়ে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, মুখ ফসকে দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতির বদলে 'রাষ্ট্রপত্নী' বলেছিলেন।
বিরোধীদের বিরোধিতার জেরে সংসদের অধিবেশন কার্যত অচল হয়ে গিয়েছিল। বাদল অধিবেশনে ৩২টি বিল তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তারমধ্যে লোকসভায় সাতটি ও রাজ্যসভায় পাঁচ বিল পাস করা সম্ভব হয়েছে।