ঋদ্ধিমান সাহার পর এবার সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ও বাংলা ছাড়লেন। আসন্ন ২০২২-২৩ মরশুমে তিনি খেলবেন ত্রিপুরার হয়ে। যে দলের মেন্টর কাম ক্রিকেটার হিসেবে থাকছেন ঋদ্ধিমানও। অনেক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল সুদীপের বাংলা ছাড়ার ব্যাপারে। বাংলার সম্ভাব্য দলে থাকা সুদীপ গতকাল আগরতলায় গিয়ে চুক্তি সেরে এসেছেন।
(ছবি- ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন)
ঋদ্ধিমানের মতো সুদীপও বাংলা ছাড়ছেন একরাশ অভিমান নিয়ে। একটা সময় তাঁকে ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার দাবিদার বলেও মনে করা হচ্ছিল। তিরিশ বছরের সুদীপের কাছে সেই পথ অনেকটাই কঠিন হয়ে গিয়েছে। এর বড় কারণ বাংলার প্রথম একাদশে জায়গা না পাওয়া। ২০২০ সালের রঞ্জি ফাইনালে বাংলাকে প্রথম ইনিংসে লিড পাওয়ার সুবাদে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সৌরাষ্ট্র। প্রথম ইনিংসে সৌরাষ্ট্রের ৪২৫ রানের জবাবে বাংলা থেমেছিল ৩৮১ রানে। সেই ইনিংসে সর্বাধিক স্কোর ছিল সুদীপের। ২৪১ বলে ৮১ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় সর্বাধিক ছিল ঋদ্ধিমানের (১৮৪ বলে ৬৪)। উল্লেখ্য, এই দুই ক্রিকেটারই এবার খেলবেন ত্রিপুরায়।
সিএবি সূত্রে খবর, সুদীপ যাতে বাংলা না ছাড়েন সেজন্য খোদ হেড কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে বরফ গলেনি। গত মরশুমে রঞ্জিতে বরোদা ম্যাচে ১১ ও ১৮ রান করার পর সুদীপকে বাদ দেওয়া হয়। এমনকী সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাকে নেতৃত্ব দেওয়ার পর তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছিল। ব্যাট হাতে রান পেয়েও বাদ পড়ায় ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল সুদীপের মধ্যে। সুযোগ পেলে তবে তো রান করবেন, তাতে জাতীয় দলে সুযোগের চেষ্টা করা যায়। কিন্তু সুযোগই যদি না মেলে তাহলে বাংলায় থাকার কোনও অর্থ নেই, এটা সুদীপ বুঝতে পারেন।
এরই মধ্যে ত্রিপুরায় খেলার প্রস্তাব পান। সুদীপের কথা হয় ঋদ্ধিমানের সঙ্গে। অবশেষে বাংলা ছাড়ার সিদ্ধান্তটা সুদীপ নিয়েই ফেললেন। ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, সুদীপ কোনওরকম প্রফেশনাল ফি নিচ্ছেন না। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬৩টি ম্যাচে সুদীপ ৩৯৮৮ রান করেছেন, ১০টি শতরান ও ১৯টি অর্ধশতরান করেছেন। সর্বাধিক স্কোর ১৯২। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ৫৬ ম্যাচে ১৩২০ ও ২৬টি টি ২০-তে ৫১৩ রান করেছেন। একদিনের ক্রিকেটে ১১টি ও টি ২০-তে পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে বাঁহাতি সুদীপের। আগামীকাল সিএবিতে গিয়ে ত্রিপুরার হয়ে খেলার ছাড়়পত্র সুদীপ নিতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে যেভাবে পরপর দুই প্রথম সারির ক্রিকেটার বাংলা ছাড়লেন তা বাংলার ক্রিকেটের পক্ষে ভালো বিজ্ঞাপন একেবারেই নয়।