বাণিজ্য ঘাটতির সঙ্গে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার, আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়তে চলেছে বাংলাদেশ?

গত কয়েকমাস ধরে শ্রীলঙ্কার ব্যাপক অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা গিয়েছে। যার জেরে শ্রীলঙ্কার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। সাধারণ মানুষ বিক্ষোভের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছেন। এরমধ্যেই বাংলাদেশে জ্বালানির তেলের মূল্যের ব্যাপক বৃদ্ধির জেরে সারা দেশ বিক্ষোভ সাক্ষী হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, আগে কখনও জ্বালানি তেলের মূল্য এভাবে বৃদ্ধি পায়নি। এছাড়াও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারের অবস্থা ভালো নয়। তবে কি বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার পথেই এগোচ্ছে, প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। বিশেষজ্ঞরাও এই ধরনের আশঙ্কা করছেন।

বাংলাদেশে জ্বালানির ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি

৫ আগস্ট বাংলাদেশ সরকার জ্বালানির তেলের দাম এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম ৪২.৫ শতাংশ ও পেট্রোলের দাম ৫১.১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে পেট্রোলের দাম ৮৪ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০ টাকা হয়েছে। কেরোসিন ও পেট্রোলের দাম ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৪ টাকা হয়েছে। একলাফে জ্বালানির লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে শুক্রবার মাঝরাত থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। ঢাকা সহ বিভিন্ন শহরের বিক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।

বৈদেশিক রিজার্ভ ভাণ্ডারের অবস্থা শোচনীয়

বাংলাদেশে বৈদেশিক রিজার্ভ ভাণ্ডারের অবস্থা ভালো নয়। বাংলাদেশে ক্রম হ্রাসমান বৈদেশিক রিজার্ভ ভান্ডারের ওপর নজর রেখে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে বাংলাদেশ সরকার ৪.৫ বিলিন মার্কিন ডলার ঋণ চেয়েছে। আইএমএফ -এর কাছে চাওয়া ঋণের পরিমাণের ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সুদ মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণে বাংলাদেশকে কোনও সুদ দিতে নাও হতে পারে। বাকি ঋণের ক্ষেত্রে ২ শতাংশের কম সুদ দিতে হতে পারে বলে কলকাতার অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের জুনিয়র ফেলো সোহিনী বোস জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে বাণিজ্য ঘাটতি

বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৩ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। খুব দ্রুত বাংলাদেশের আর্থিক বৃদ্ধি হচ্ছে। ১৯৭২ সালে জন্মের সময় বাংলাদেশ মূলত কৃষি নির্ভর ছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে বাংলাদেশ শিল্প নির্ভর দেশ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন জিডিপিতে মাত্র ১৩ শতাংশ ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে, সেবা খাতে দেশের জিডিপি ৫৬ শতাংশ অবদান রাখে। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের জুনিয়র ফেলো সোহিনী বোস জানিয়েছেন, করোনা মহামারী দেশটির ওপর খুব খারাপ প্রভাব ফেলেছে। যা প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়েছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অর্থনীতির মূল ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পোশাক রফতানি বাংলাদেশের বাণিজ্যের প্রায় ৮৪ শতাংশ দায়ী। কিন্তু করোনা মহামারীর ফলে এই পোশাক শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অর্ডার এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যায়। যার ফলে কমে যায় রফতানি। পাশপাশি একাধিক ছোট ছোট পোশাক তৈরির কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রাও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কিন্তু করোনা মহামারীর জেরে তাও বাধাগ্রস্ত হয়।

আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, এখনই দেশের অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। জুলাইয়ের শেষের দিকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আর্থিক সঙ্কটের কোনও সম্ভাবনা নেই। আগামী তিন মাসের খাদ্যশষ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস মজুত করার অর্থ দেশের রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে পারছেন না বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ।

বঙ্গ বিজেপিতে কি পালাবদলের সম্ভাবনা! সুকান্ত-শুভেন্দুদের হঠাৎ তলবে জল্পনা তুঙ্গেবঙ্গ বিজেপিতে কি পালাবদলের সম্ভাবনা! সুকান্ত-শুভেন্দুদের হঠাৎ তলবে জল্পনা তুঙ্গে

More SHEIKH HASINA News  

Read more about:
English summary
With trade deficit and reduce forex may indicate economic crisis in Bangladesh
Story first published: Tuesday, August 9, 2022, 19:16 [IST]