তৃণমূলের চিঠি উপেক্ষা, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়ে বোঝালেন কোন দিকে শিশির-দিব্যেন্দুরা

তৃণমূল উপরাষ্ট্রপতি পদে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই মর্মে চিঠিও দিয়েছিল প্রত্যেক সাংসদক। কিন্তু সেই চিঠি উপেক্ষা করে তৃণমূলের দুই সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী ভোট দিলেন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে। এই ভোটদানেই তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান বর্তমানে কী।

শিশির-দিব্যেন্দু ভোট দিলেন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংসদ ভবনে গিয়ে ভোট দেওয়ার পর শিশির অধিকারী স্পষ্ট করেই জানিয়েছিলেন, তিনি তৃণমূলে ছিলেন, আছেন, থাকবেনও। দল মানুক না মানুক, তিনি তৃণমূলেই আছেন। তৃণমূল তিনি ছাড়েননি। তাই দলের মনোনীত প্রার্থীকেই তিনি ভোট দিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে ভোটদানে বিরত থাকার কথা বললেও দলের হুইপ অগ্রাহ্য করে তিনি এবং তাঁর পুত্র দিব্যেন্দুও ভোট দিলেন।

সব জল্পনার অবসান ঘটালেন ভোট দিতে এসে

শনিবার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে বেলা সাড়ে বারোটার পর হাজির হন পিতা-পুত্র। তাঁরা সংসদ ভবনের দ্বিতলে ৬৬ নম্বর রুমে গিয়ে ভোট দেন। তৃণমূলের চিঠি উপেক্ষা করে ভোট দেওয়ার পর স্পষ্ট তাঁরা কাকে ভোট দিয়েছেন। তৃণমূলের চিঠি প্রদানের পর জল্পনা বাড়লেও তাঁরা সব জল্পনার অবসান ঘটালেন ভোট দিতে এসে।

বর্তমান অবস্থান স্পষ্ট শিশির-দিব্যেন্দু অধিকারীর

শিশির অধিকারী চিঠি পাওয়ার পর জানিয়েছিলেন, কাল ভোট দিতে গেলেও দেখতে পাবেন, আর না দিতে গেলেও দেখতে পাবেন। সেই মতো এদিন সংসদ ভবনে ভোট দিতে এসে তাঁরা প্রমাণ করে দিলেন তাঁদের বর্তমান অবস্থান এখন কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাঁরা যে শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাবের বাইরে গিয়ে তৃণমূলে থাকতে পারেন না, তা ফের একবার প্রমাণিত। শুধু সাংসদ পদ রেখে দেওয়ার জন্যই তাঁরা তৃণমূলে রয়েছেন বলে আওয়াজ তোলেন।

ভোট দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন কোন দিকে তাঁরা

অধিকারী পরিবারের দুই সাংসদকে চিঠি দিয়ে তৃণমূল স্পষ্ট করে দেয়, আসন্ন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস অংশগ্রহণ করছে না। কোনও প্রার্থীকেই ভোট দেবেন না তাঁরা। কেউ যদি ভোটে অংশ নেন, তবে ধরে নিতে হবে তিনি দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী ভোট দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন দলের নির্দেশ তাঁরা মানছেন না।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পরে বার্তা শিশির-দিব্যেন্দুর

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী উভয়েই দাবি করেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে তাঁদের কোনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বা ভোট নিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তাঁরা তাঁদের ইচ্ছামতোই দলের মনোনীত প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। তবে বিধানসভায় গিয়ে ভোট দেবেন না। ভোট দেবেন সংসদ ভবনে গিয়ে। সেইমতো সংসদ ভবনে গিয়ে ভোট দেওয়ার পর দাবি করেন, তাঁরা দলীয় প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছেন। দলীয় প্রার্থীকে ভোট দিলেও বিজেপি তথা এনডিও মনোনীত প্রার্থীই যে সুযোগ্য তা বুঝিয়ে দেন শিশির অধিকারী।

‘যোগ্য' প্রার্থীকে ভোট দিতে নির্দেশ অমান্য দলের

একইসঙ্গে শিশির অধিকারী উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও এনডিএ-র প্রার্থী জগদীপ ধনখড়কে যোগ্যতম বলে বর্ণনা করেন শিশির অধিকারী। ধনখড়কে বাংলার সেরা রাজ্যপাল বলেও অভিহিত করেন তিনি। এবার সেই 'যোগ্য' প্রার্থীকে তাঁরা ভোট দিলেন তৃণমূলের নির্দেশ অমান্য করে। এখন ভোটদানের পর শিশির অধিকারী কি বলবেন যে দলে আছি, সেই দলকেই সমর্থন করি। তিনি এর আগে বলেছিলেন, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও দল যা বলবে, তিনি সেটাই করবেন। কিন্তু আদতে দেখা গেল উল্টোচিত্র।

More SISIR ADHIKARI News  

Read more about:
English summary
Sisir Adhikari and Dibyendu Adhikari indicate their political stand to give vote in vice president election.