সংসদের কাজে বাধাদানের অভিযোগ
গত ১৮ জুলাই সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই রাজ্যসভা ও লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করা হয়েছে একাধিকবার। যার অন্যথা হয়নি শুক্রবারেও। ওইদিন অধিবেশন শুরু হওয়ার পরেই কংগ্রেস সাংসদরা তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপব্যবহারের অভিযোগ করে হই-হট্টগোল করেন। অধিবেশন বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত মুলতুবি করেন দেন চেয়ারম্যান।
এর পরে অধিবেশন শুরু হলে চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, তিনি একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চান, অধিবেশনের সময় তদন্তকারী সংস্থাগুলির কাজ তাদের বিশেষ সুবিধা করে দিয়েছে, এটা যেন মনে না করেন সদস্যরা।তিনি এব্যাপারে চিন্তা করেছেন। পাশাপাশি আগেকার সব নজির পরীক্ষা করেছেন। তার দেওয়া নিজের রায়ের কথাও তিনি মনে করেছেন।
সাংসদরা বিশেষ সুবিধা পান
বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেছেন, সংবিধানের ১০৫ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে সাংসদরা বিশেষ কিছু সুবিধা পেয়ে থাকেন, তাঁদের সংসদীয় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে। এর মধ্যে একটি সুবিধা হল, যেকোনও সাংসদকে অধিবেশন কিংবা কমিটির বৈঠক শুরুর ৪০ দিন আগে কিংবা পরে দেওয়ানি মামলায় গ্রেফতার করা যায় না। এই অধিকারটি ইতিমধ্যেই সিভিল প্রসিডিওর কোজ ১৯০৮-এর ১৩৫-এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ফৌজদারি মামলায় আলাদা সুবিধা নেই
পাশাপাশি বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেছেন ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে সাংসদরা সাধারণ নাগরিকের থেকে কোনওভাবেই আলাদা কিছু নন। এর অর্থ হল অধিবেশন চলাকালীন সাংসদদের ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার করা যাবে। বর্তমান রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু ১৯৬৬ সালে দেওয়া তৎকালীন চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানে বলা হয়েছিল. সংসদ সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য বিশেষ সুবিধা ভোগ করে থাকেন।
সংসদের অধিবেশন চলাকালীন গ্রেফতার থেকে মুক্তির জন্যই এই সুবিধা। তবে তা শুধুমাত্র দেওয়ারি মামলার জন্য সীমাবদ্ধ। এব্যাপারে ফৌজদারি মামলায় কোনওভাবে হস্তক্ষেপ করা যায় না। এব্যাপারে তিনিও যে সহমত পোষণ করেন, তাই তিনি কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ একই
এব্যাপারে বেঙ্কাইয়া নাইডু সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশেই বলেছেন, একজন সংসদ সদস্য এব্যাপারে বিশেষ মর্যাদা দাবি করতে পারেন না। একজন সাধারণ নাগরিকের ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য, তা প্রযোজ্য অধিবেশন চলাকালীন সাংসদের ক্ষেত্রেও। প্রয়োজনে গ্রেফতার, আটক কিংবা জিজ্ঞাসাবাদ সব কিছুরই সম্মুখীন হতে হবে সেই সংসদকে।