প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকেলে ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পাওনা টাকা ও জিএসটি বাবদ বকেয়া টাকার দাবি জানান। কিন্তু শুধু বকেয়ার দাবিতেই নয়, এই বৈঠকে আরও গুরুত্বপূর্ণ বহু বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হয় বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি সফরে গিয়েছেন। ৭ অগাস্ট নীতি আয়োগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার দুদিন আগেই পৌঁছে গিয়েছেন দিল্লিতে। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে পৌঁছনোর পর শুক্রবার বিকেলেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক হল।
এখন প্রশ্ন এই দীর্ঘ ৪০ মিনিটের বৈঠকে কী কী আলোচনা হল। রাজ্যের তরফে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী বাংলার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সমীপে গিয়েছেন। রাজ্যের বকেয়া পাওনা নিয়ে দাবি জানাতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেইসঙ্গে জিএসটির পাওনা নিয়েও আলোচনা হবে তাঁদের মধ্যে।
তবে প্রধানমন্ত্রী বাসভবন সেভেন রেসকোর্সের বৈঠকে এদিন আলোচনার বিষয়বস্তুতে আরও অনেক কিছুই থাকতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই বৈঠকে যেমন কেন্দ্রের প্রকল্পের নাম নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, তেমনই রাজ্য রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় দুই জননেতা-নেত্রীর বৈঠকে উঠে আসবে, সেটাই স্বাভাবিক।
রাজ্যের দাবি, কেন্দ্রের কাছে তাঁদের ১ লক্ষ ৯৬৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। কোন কোন খাতে কী বাকি, তাও জানান তিনি। একশো দিনের কাজ ও জিএসটি বাবদ যে টাকা পাওনা রয়েছে, তা অবিলম্বে মেটানোর দাবি জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এই দীর্ঘ আলাপচারিতায় বকেয়ার দাবি ছাড়াও বাংলা আবাস যোজনা ও সড়ক যোজনার কাজ নিয়েও আলোচনা করেন।
কেননা নাম বিতর্কে ওই যোজনার কাজ আটকে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী দাবি জানান, কেন তাঁরা বাংলা আবাস যোজনা বা বাংলা সড়ক যোজনা করতে পারবেন না। তাঁরা তো প্রধানমন্ত্রীর জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী আবাস যোজনা নাম ব্যবহার করছেন না। এই যোজনার কেন্দ্রের পাশাপাশি বাংলাও টাকা দেয়, সেই দাবিও তুলে ধরেন মমতা।
তবে প্রধানমন্ত্রী সমীপে মুখ্যমন্ত্রী ইডি ও সিবিআই দ্বারা হেনস্থার কথা তুলে ধরেন বলেও রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অভিযোগ করেন, ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যের বিরোধী দল সিপিএমের পক্ষে আবার মোদী-মমতার বৈঠককে সেটিং বলে কটাক্ষ করেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী হলুদ গোলাপের তোড়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।