প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানি কমিয়েছে রাশিয়া
ইউরোপের দেশগুলো প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভর করে রাশিয়ার ওপর। জার্মানি তাদের প্রয়োজনীয় মোট প্রাকৃতিক গ্যাস রাশিয়ার থেকে আমদানি করে। ফ্রান্স, জার্মানির মতো ইউরোপের একাধিক দেশ রাশিয়া থেকেই প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করে। কিন্তু বর্তমানে রাশিয়া প্রাকৃতিক গ্যাসের রফতানি এক ধাক্কায় অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। যার ফলে বিপাকে পড়েছে ইউরোপের দেশগুলো। যে পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস রাশিয়া থেকে বর্তমানে আমদানি হচ্ছে, তা এখন চলে গেলেও, শীতকালে সমস্যা হবে। অন্যদিকে, রাশিয়া যদি একেবারে প্রাকৃতিক গ্যাস একেবারে বন্ধ করে দেয়, সেক্ষেত্রে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ শীতকালে ঠান্ডায় ডুবে যাবে। তাই এখন থেকে বিভিন্ন দেশ প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ করতে শুরু করেছে।
আগাম সতর্কতায় ইউরোপ
ইউরোপের দেশগুলো প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে তৎপর হয়েছে। কিন্তু সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত আতঙ্ক থেকে যাচ্ছে। রাশিয়া চলতি বছরের শেষে প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়ে, ২০২৩-এর শীত ইউরোপের বাসিন্দাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠবে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন জানিয়েছেন, 'ইউরোপকে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। রাশিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেবে ধরে নিয়েই আমাদের মজুতের পরিমাণ বাড়াতে হবে। গ্যাসের ব্যবহার কমাতে হবে। আমি জানি, এটা ইউরোপের বাসিন্দাদের জন্য একটা প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। কিন্তু বর্তমানে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমানো ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।' অন্যদিকে, ফ্রান্সের জ্বালানি মন্ত্রী অ্যাগনেস পানিয়ার রানচার বলেন, 'রাশিয়া গ্যাস দেওয়া বন্ধ করে দিলে, আমাদের জন্য ২০২৩ সালের শীতকাল অত্যন্ত কঠিন হতে চলেছে। তিনি বলেন, আমাদের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।' জার্মানিতেও প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত বাড়াতে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জার্মানির প্রায় ২০টি পর্যটন কেন্দ্রে আর সারা রাত আলো জ্বালিয়ে রাখা হবে না। শুধু তাই নয়। মিউনিখের মিউনিসিপ্যাল সুইমিং পুলে সুনাস বন্ধ রাখা হচ্ছে। যার ফলে সুইমিং পুলের জল অত্যন্ত ঠান্ডা হয়ে পড়ছে। মিউনিখ তাদের মোট প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ ১৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 'জার্মানির চ্যান্সেলর বলেন, পরিস্থিতি খুব একটা মসৃন নয়, আবার অসম্ভবও নয়। আগামী শীতের কথা মাথায় রেখে আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার জের
ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের তীব্র বিরোধিতা করে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, জাপানের মতো দেশ। পশ্চিমি দেশগুলো রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যার জেরে রাশিয়ার অর্থনীতি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পাল্টা রাশিয়া ইউরোপের দেশগুলোকে বিপাকে ফেলতে প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানি অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। যার জেরে বেশ চাপে পড়েছে ইউরোপের দেশগুলো।