সত্যজিত রায় লিখেছিলেন , 'আমরা দুজন ভায়রা ভাই, আমাদের আর কোনও কাজ নাই। মোরা ভূতের রাজার বরের জোরে, পরের ভূত ছাড়াই। আমাদের আর কোনও কাজ নাই।" কিন্তু এই ভায়রা ভাইয়ের অনেক কাজ কাম আছে। না আছে ভূতের রাজা, না আছে তার বর। তাঁরা দুজনে পল্লেকেলে বোনেদের বর। তাদের একজনের কাজ জাতীয় দলের হয় ক্রিকেট খেলা , অপরজন জাতীয় স্কোয়াশ খেলোয়াড়। এই ভায়রা ভাইদের একজন হলেন দীনেশ কার্ত্তিক অপরজন হলেন সৌরভ ঘোষাল।
সম্প্রতি 'ঘোষাল বাবু' কমনওয়েলথে ব্রঞ্জন পদক জিতেছেন। তাই বেজায় খুশি দীনেশ কার্ত্তিক। টুইট করে দিয়েছেন বিশেষ শুভেচ্ছা বার্তা। দীপিকা পল্লেকেলের বোন দিয়া পল্লেকেলে। এই দিয়া পল্লেকেলের স্বামী হলেন সৌরভ ঘোষাল। তাঁরা ২০১৭ সালে বিয়ে করেন। আর কে না জানে দীপিকা পল্লেকেলে এবং দীনেশ কার্ত্তিক স্বামী - স্ত্রী। সেই হিসাবে কার্ত্তিক ও সৌরভ ভায়রা ভাই। সৌরভ কমনওয়েলথে একক ভাবে স্কোয়াশে ব্রোঞ্জ জিতেছেন। তিনিই প্রথম এই কীর্তি করে দেখালেন। সৌরভের সাফল্যে এমন সাফল্যে তাই সম্পর্কের দিক থেকে যারপরনাই খুশি কার্ত্তিক। টুইটের ভাষায় তা স্পষ্ট।
Persistence , resilience , belief
— DK (@DineshKarthik) August 3, 2022
Proud of you @SauravGhosal
Sport can be cruel but also keeps rewarding in ways more than you can imagine .
India’s greatest ever squash player . Well done champion ❤️👑 https://t.co/rlPfeasEHP
তিনি লিখেছেন , 'অধ্যবসায়, লড়ে যাওয়া , বিশ্বাস। তোমার জন্য গর্বিত সৌরভ ঘোষাল। খেলাধুলা নিষ্ঠুর হতে পারে কিন্তু আপনি যদি লেগে থাকেন তাহলে কল্পনাতিত ভাবে সাফল্য পেতে পারেন। ভারতের সর্বকালের সেরা স্কোয়াশ খেলোয়াড়। শুভকামনা চ্যাম্পিয়ন।"
শুধু কী ভায়রা ভাই বলেই খুশিতে এই অভিনন্দনে ভরা টুইট? এক্কেবারেই তা নয়। নিজের সঙ্গে সৌরভের মিল খুঁজে পান যে কার্ত্তিক। এটা সবার জানা যে ২০১৯ বিশ্বকাপের পর কার্ত্তিক ভেবেও নিয়েছিলেন আর সুযোগ আসবে না। তাই ধারাভাষ্যকার হিসাবে কাজ করা শুরু করেছিলেন। ব্যাটটা একেবারে তুলে রাখেননি। তাই খেলতে শুরু করেন ঘরোয়া ক্রিকেট। আসে ব্যাপক সাফল্য। তারপরে আইপিএল। ব্যাপক সফল এবং জাতীয় দলে ফিরে আসা। দলে ফিরে দুরন্ত ভাবে পারফর্ম করে যাচ্ছেন তিনি। ৩৭ বছর বয়সে অনেক ক্রিকেটার যখন কীভাবে ব্যাট বলটা কীভাবে সুন্দরভাবে তুলে রাখবেন সেই ভাবনায় থাকেন সেখান থেকেই নতুনভাবে শুরু করেছেন কার্ত্তিক।
আর সৌরভ ঘোষাল। বয়স ৩৫। স্কোয়াশের মতো খেলায় প্রয়োজন ব্যাপক ফিটনেস। না হলে বিপক্ষ দাঁড়াতে দেবে না। সেটা করে দেখিয়েছেন তিনি। আগের তিন বারে তিনি কমনওয়েলথ গেমসে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে লড়াইটা ছাড়েননি। ২০১০, তৃতীয় রাউন্ডে হেরে যান তিনি। ২০১৪ হারেন ব্রোঞ্জ মেডেল ম্যাচে। ২০১৮ , হেরে যান প্রথম রাউন্ডেই। ২০২২ ব্রোঞ্জ জিতে নিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ বয়স বেড়েছে, কিন্তু জেতার খিদে কমেনি। তাই ময়দানে থেকে লড়াইটা লরে গিয়েছেন। একদিনে হয়নি, সাফল্য একদিন তাই এসে তাঁকে ধরা দিল। আর এখানেই হয়তো কার্ত্তিক আরও বেশি খুশি। আর তাই তিনি তার ভায়রা ভায়ের সাফল্যে খুশি হয়ে টুইট করেছেন।