কী ঘটেছিল হাসপাতালে
প্রবল বুকে ব্যথা নিয়ে শাহদোল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় জয়মন্ত্রী যাদবকে। তাঁর দুই ছেলে অনুপপুর জেলা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন ভালো চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার আশায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জয়মন্ত্রী যাদবকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়। তাঁর দুই ছেলে অভিযোগ করেন, 'মাকে ভর্তি নিলেও উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তাঁকে হাসপাতালের বেডে এমনি ফেলে রাখা হয়েছিল।' সন্ধের পর থেকে তাঁর মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেই সময়ও নার্সরা তাঁকে গ্রাহ্য করেনি। চিকিৎসা শুরু করার জন্য তাঁরা বার বার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। দুই ভাই অভিযোগ করেছেন, চিকিৎসার গাফিলতিতে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
মিলল না শববাহী গাড়ি
মায়ের মৃত্যুর পর দুই ভাই দেহ নিজেদের গ্রামে নিয়ে যেতে তৎপর হন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও শববাহী গাড়ি পাওয়া যায়নি হাসপাতালের তরফে। অবশেষে একটি শববাহী গাড়ির হদিশ পাওয়া যায়। কিন্তু ওই গাড়ির চালক ৫০০০ টাকা চেয়ে বসেন। ওতো টাকা দেওয়ার সামর্থ তাঁদের নেই। তাই বাধ্য হয়েই বাইকে মায়ের দেহ নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। স্থানীয় বাজার থেকে ১০০ টাকার বিনিময়ে একটি কাঠের পাটাতন কেনেন। সেখানেই তাঁরা তাঁদের মায়ের দেহ বাঁধেন। এরপর বাইকের সঙ্গে কাঠের পাটাতনটি বেঁধে দুই ভাই ৮০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের উদ্দেশ্যে রহনা দেন।
|
প্রশ্নের মুখে মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
ঘটনার জেরে ফের প্রশ্নের মুখে মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। কয়েকদিন আগে মধ্যপ্রদেশের সাগরের এক হাসপাতালে একটি সিরিঞ্জ দিয়ে ৩০ জন ছাত্রকে টিকা দেওয়া হয়। গত বুধবারের এই ঘটনায় তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। কাজের অবহেলার জন্য অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। যদিও অভিযুক্ত স্বাস্থ্য কর্মী জিতেন্দ্র জানান, কর্তৃপক্ষ তাঁকে একটি মাত্র সিরিঞ্জ পাঠিয়েছিল। সমস্ত ছাত্রদের টিকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে তাঁর কিছু করার ছিল না। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় শববাহী যানের অভাবে বাইকে বেঁধে মায়ের দেহ নিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এল। এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি ঘটনা মধ্য প্রদেশের স্বাস্থ্য দফতরকে যে অস্বস্তিতে ফেলল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।